মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ৫৭৪ ডলার
কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
সরকারের পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের স্থিতি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মিলছে না। দুই হিসাবের মধ্যে পার্থক্য প্রায় ১ হাজার ৩৩৫ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা (১ ডলার = ১১০ টাকা হিসাবে)। অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২৩) সরকারের পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বৈদেশিক মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ১৯১ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার (১ ডলার=১১০ টাকা হিসাবে)। এটি জিডিপি'র ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, একই সময়ে সরকারের বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৫২৬ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৮ লাখ ২৭ হাজার ৯৫৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা (১ ডলার=১১০ টাকা হিসাবে)। সরকারের পুঞ্জিভূত বৈদেশিক ঋণস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, দ্বিপক্ষীয় উৎসের তুলনায় বহুপক্ষীয় উৎস থেকে গৃহীত ঋণের পরিমাণ বেশি। অর্থ বিভাগ বলছে, সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনার মান উন্নয়নে স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান 'মধ্য মেয়াদি ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশল' আরও আধুনিকায়ন করা হবে এবং আঙ্কটাড-এর কারিগরি সহায়তায় অর্থ বিভাগে 'ডেট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল এনালাইসিস সিস্টেম' নামে একটি কাস্টমাইজ ডাটাবেজ স্থাপন করা হবে।
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বাভাবিকভাবেই যদি অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে পড়ে, তবে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল শেষে সামগ্রিক বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) এ ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এসব ঋণের ৭৯ শতাংশই নিয়েছে সরকার এবং বাকি ২১ শতাংশ ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি ঋণের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বিদেশি ঋণের বিষয়টি আমলে নেওয়া এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।
মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এখন সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ বিদেশি ঋণ। অর্থনীতিতে ঝুঁকির প্রধান প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া, সম্পদ ও আয়বৈষম্য এবং সরকারি ঋণ বেড়ে যাওয়া ও বেকারত্ব।
যখন ঝুঁকির বিষয়গুলো সামনে আসছে তখন তা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জরুরি এবং সে অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।