বায়ুদূষণ রোধে উদ্যোগ নিতে হবে
প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
কোনোভাবেই দূষণমুক্ত হচ্ছে না রাজধানী ঢাকা। বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত খবরে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত যেসব তথ্য ওঠে আসে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বায়ুদূষণে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার স্কোর ১৬৭। বায়ুর এ মান অস্বাস্থ্যকর হিসেবে ধরা হয়। গত বুধবার ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয় আর স্কোর ছিল ২১৩। বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক আইকিউএয়ারের সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে। আইকিউএয়ার সম্প্রতি ২০২৩ সালে বিশ্বে বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে দেখা যায়, বায়ুদূষণে গত বছর শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তান। আর রাজধানী শহর হিসেবে ঢাকার স্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। শীর্ষে ছিল ভারতের নয়াদিলিস্ন। ২৮ মার্চ সকালে বিশ্বে বায়ুদূষণে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের দিলিস্ন ও থাইল্যান্ডের চিয়াংমাই। শহর দু'টির স্কোর যথাক্রমে ১৮৫ ও ১৭২। আইকিউএয়ারের মানদন্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে 'মাঝারি' বা 'গ্রহণযোগ্য' মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর' ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা 'অস্বাস্থ্যকর' বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে 'দুর্যোগপূর্ণ' বা 'ঝুঁকিপূর্ণ' ধরা হয়। ঢাকার বায়ুদূষণ থেকে বাঁচতে আইকিউএয়ার যে পরামর্শ দিয়েছে, তার মধ্যে আছে ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বাইরে গিয়ে ব্যায়াম করা যাবে না। আর ঘরের জানালা বন্ধ রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বায়ুদূষণ বেশি হলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে ভোগা মানুষেরা। তাঁদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। ফলে বিশেজ্ঞদের পরামর্শ আমলে নিতে হবে। এছাড়া এটাও, ঢাকার বায়ুদূষণের স্থানীয় উৎসগুলোর মধ্যে আছে যানবাহন ও কলকারখানার ধোঁয়া, নির্মাণ কাজের দূষণ, আশপাশের ইটভাটার ধোঁয়া ইত্যাদি এগুলোও এড়ানো যাবে না।
আমরা মনে করি, বায়ুদূষণ সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি যেমন আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, তেমনি দূষণরোধে উদ্যোগী হওয়াও একইসঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
বায়ুদূষণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবেশগত স্বাস্থ্য হুমকি। ফলে বায়ুর মানের বিষয়টি আমলে নিতে হবে এবং এই হুমকি মোকাবিলা করতে হবে। বায়ুদূষণের কারণে বাচ্চাদের স্বল্প ও দীর্ঘস্থায়ী রোগব্যাধি হয়। এছাড়া ফুসফুসে ক্যানসার, হৃদরোগ, লিভার ও কিডনিতে জটিলতা বাড়তে পারে। ফলে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে এমনটাই প্রত্যাশিত।