মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রবাসী আয় অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে

  ২৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
প্রবাসী আয় অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে

বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ। সঙ্গত কারণেই দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করা সার্বিক অগ্রগতির প্রশ্নেই জরুরি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে যে, প্রতি বছরের মতো এবারও রমজানের শুরু থেকেই বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২২ দিনে বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৪১ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। মূলত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি মার্চের প্রথম ২২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪১ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১৪ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন)। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৮ কোটি ২৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে দুই কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। উলেস্নখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১০ কোটি মার্কিন ডলার। আর ফেব্রম্নয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।

আমরা বলতে চাই, প্রতি বছরের মতো এবারও রমজানের শুরু থেকেই বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা- যা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। ফলে এটি আমলে নিয়ে রেমিট্যান্সের অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক পদক্ষেপও নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, যখন প্রবাসী আয়ে সুখবর আসে তখন তা আশাব্যঞ্জক। এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি যেমন পর্যবেক্ষণ জরুরি, তেমনি রেমিট্যান্স কীভাবে বাড়ানো যায় এই লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে তৎপর থাকতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রবাসী আয় দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে অবদান রাখছে। ফলে, রেমিট্যান্সে যে ইতিবাচক খবর এলো, তা ধরে রাখতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক। এটাও বলা দরকার যে, নানা সময়ে রেমিট্যান্সে ধস নামার বিষয়টি সামনে এসেছিল। সঙ্গত কারণেই এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, প্রবাসী আয়ে ধস নামলে বিষয়টিকে সহজভাবে দেখার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি রেমিসট্যান্সের অগ্রগতি ধরে রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপও গ্রহণ অপরিহার্য।

স্মর্তব্য, দেশের অগ্রগতিতে রেমিট্যান্সের উলেস্নখযোগ্য অবদান রয়েছে। এছাড়া, রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে- এমনটি জানা গিয়েছিল- যা ইতিবাচক। বিশেষ করে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক- এমন আলোচনা সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। এছাড়া কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি নতুন বাজার এবং দক্ষ জনশক্তির বিষয়টিও আমলে নিতে হবে। প্রবাসে দক্ষ জনশক্তি যত বেশি পাঠানো সম্ভব হবে ততই দেশের সুনাম বাড়বে এবং জনশক্তি রপ্তানিও বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করা সঙ্গত। ফলে সার্বিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যখন প্রবাসী আয় বৃদ্ধির খবর আসছে, তখন তা আমলে নিয়ে পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। মনে রাখা দরকার, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যই ইতিবাচক। ফলে প্রবাসী আয়ের বিষয়টিকে সামনে রেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা এবং দক্ষ জনশক্তি নিশ্চিত করা জরুরি। আর সেই লক্ষ্যে বাড়াতে হবে প্রশিক্ষণের পরিধিও।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে