মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সশস্ত্র বাহিনী স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক

কর্নেল ইব্রাহিম ফারুক
  ২৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
সশস্ত্র বাহিনী স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক

আজ ঐতিহাসিক ২৬ মার্চ। দিনটি আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাসে বিশেষ গৌরবময় স্থান দখল করে আছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার আপামর জনতা আর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের আক্রমণে মুক্তিযুদ্ধে যোগ হয় এক নতুন মাত্রা। এভাবে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় আমাদের মহান বিজয়, একটি জাতি, রাষ্ট্রের ভূখন্ড, একটি স্বাধীন মানচিত্র ও একটি স্বাধীন পতাকা। জাতির পরম আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছিল রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। দেশ প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন ছাড়াও জাতির বিভিন্ন সংকট ও ক্রান্তিকালীন যথাযথ ভূমিকা পালন ও অবদান রাখার দৃষ্টান্তে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে আজ এ দেশের আপামর জনসাধারণ গর্বিত। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর এসব সাফল্যমন্ডিত কর্মকান্ড বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বৃহত্তর পরিসরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যে বিশাল সম্মান বয়ে এনেছে- তা শুধু সশস্ত্র বাহিনীর নয় বরং এ দেশের সবার অহংকার।

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি অফিসার ও সৈনিকরা। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্নেই পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর প্রায় ২৬ হাজার বাঙালি অফিসার ও সৈনিক সরাসরি বিদ্রোহ করে দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশ নেয়। ২৫ মার্চ রাত্রে চট্টগ্রামের ষোলোশহরে অবস্থানরত ৮ম ইস্টবেঙ্গল, ২৬ মার্চ দিনের বেলায় কুমিলস্নায় অবস্থিত ৪র্থ ইস্টবেঙ্গল, ২৭ মার্চ জয়দেবপুরে অবস্থানরত ২য় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ২৮ মার্চ যশোরে অবস্থানরত, ১ম ইস্টবেঙ্গল ও সৈয়দপুরে অবস্থানরত ৩য় ইস্টবেঙ্গল হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেয়। এই পাঁচটি পদাতিক ব্যাটালিয়নই মুক্তিবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোর মেরুদন্ড হয়ে দাঁড়ায়। এই অবকাঠামোর সঙ্গেই ধীরে ধীরে যোগদান করে নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা, পুলিশ, আনসার, ইপিআর-এর সদস্যরা এবং অগণিত অন্যান্য সব পেশার জনগণ।

এটা সর্বজন বিদিত যে গেরিলা যুদ্ধ দ্বারা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করা অতীতে কখনো সম্ভব হয়নি। অভিজ্ঞতায় ভাস্বর আমাদের সমর নায়করা- তাই সেদিন নিয়মিত বাহিনী গঠন করার সুদূরপ্রসারী ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তারা বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন যে গেরিলা আক্রমণের দ্বারা দখলদার বাহিনীর জীবনীশক্তি যখন নিঃশেষ প্রায় হয়ে যাবে, তখন নিয়মিত বাহিনীর প্রচলিত যুদ্ধকৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে। মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই সেনাবাহিনীর অফিসার, জেসিও অন্যান্য পদবির নিয়মিত সদস্যরা অন্যান্য বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়ে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। প্রায় এক লাখ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ ছিল নিয়মিত বাহিনীর সদস্য। চূড়ান্ত বিজয় লাভ করতে নিয়মিত যুদ্ধকৌশল অনুসরণ করে আক্রমণের মাধ্যমে শত্রম্নর অবস্থান দখল করে শত্রম্নকে পর্যুদস্ত করার জন্য জুলাই মাসে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল নিয়মিত বাহিনী গঠনের। জুলাই মাসে 'জেড' ফোর্স, সেপ্টেম্বর মাসে 'এস' ফোর্স এবং ০১ অক্টোবর তারিখে 'কে' ফোর্স, কমান্ডারদের নামের আদ্যাক্ষর নিয়ে তিনটি নিয়মিত ব্রিগেড গঠন করা হয়।

নৌবাহিনীর সদস্যরা শুরুতে নিয়মিত বাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন সেক্টরে অপারেশনে যোগ দেয়। পরবর্তী সময়ে নৌবাহিনীর কয়েকজন নাবিক ফ্রান্স থেকে পালিয়ে এসে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদান করেন। এছাড়া দুটিতে এসে যারা ফেরৎ যেতে পারেননি তারাও মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং নৌবাহিনী গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। সব সেক্টরে কর্মরত নৌবাহিনীর সদস্যদের আগস্ট মাসে কলকাতায় একত্রিত করা হয় এবং প্রশিক্ষণের জন্য হুগলী নৌ ঘাঁটিতে সবাইকে স্থানান্তর করা হয়। যুদ্ধের শুরু থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সর্বমোট ৫১৫ জন নৌ কমান্ডোকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অপারেশন পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা হয়। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই কমান্ডোরা অনেক অপারেশন করে বেশ কিছু পাকিস্তানি যুদ্ধ জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়াসহ প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করতে সমর্থ হয়। এর মধ্যে ১৫ আগস্ট তারিখের 'অপারেশন জ্যাকপট'-এর মাধ্যমে ৫টি বন্দরে একই দিনে মোট ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া ছিল বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য।

১৯৭১ সালের মে মাসের শেষ দিকে উইং কমান্ডার এ কে খন্দকার একদল অফিসার ও টেকনিশিয়ানসহ মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তাকে 'ডেপুটি চিফ অব স্টাফ' নিয়োগসহ মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ ও অপারেশন পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। মাত্র ৩/৪টি হালকা বিমান ও হেলিকপ্টার নিয়ে এবং ১০/১২ জন পাইলট ও টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শুরু করে আমাদের বিমান বাহিনী। পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে ১৭ জন অফিসার এবং ৫০ জন বিমান সেনা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

২৫ মার্চ রাত থেকে শুরু করে ০৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ দেশের মুক্তিযোদ্ধারা দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রীরদর্পে বিচ্ছিন্নভাবে দীর্ঘ আট মাস অঞ্চলভিত্তিক যুদ্ধ করার পর ২১ নভেম্বর চূড়ান্তভাবে সম্মিলিত আক্রমণ করে দখলদার বাহিনীকে প্রায় পরাভূত করে ফেলেছিল। শুধুমাত্র জান, মাল ও সামরিক সরঞ্জামাদি নয়, দখলদার বাহিনী সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যেখানে হয়েছিল তা হলো তাদের যুদ্ধ করার মনোবল। ফলশ্রম্নতিতে চূড়ান্ত বিজয় ছিল তখন কেবল সময়ের ব্যাপার। পরবর্তী সময়ে ০৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে মিত্র বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং ঢাকা অভিমুখে তাদের অগ্রযাত্রা শুরু করে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষরের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদাররা আত্মসমর্পণ করে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে অভু্যদয় হয় আমাদের স্বপ্নের ও ভালোবাসার বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেকটাই ব্যতিক্রম। আমাদের সেনাবাহিনীর জন্ম হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে, মুক্তিযুদ্ধের সময়, যে যুদ্ধটি ছিল জনযুদ্ধ। সে যুদ্ধের মহানায়ক ও সুপ্রিম কমান্ডার ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ যারা সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন, তারা প্রায় সবাই মুক্তিযুদ্ধের সমকালীন বা পরবর্তী প্রজন্মের। তাদের জন্য শিকড়ের সন্ধান করতে হলে ইতিহাসের দিকে তাকাতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের কথা জানতে, শুনতে ও বুঝতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীর আজকের প্রজন্মকে জানতে হবে, সে যুদ্ধে কৃষক-শ্রমিকের সন্তান, কুলি-মজুরসহ সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। জনযুদ্ধের ভেতরে জন্ম বলেই এ দেশের সাধারণ মানুষের আবেগ, অনুভূতি, চেতনা সবকিছুর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর একটা আত্মিক সম্পর্ক দৃশ্যমান।

বিজয় অর্জনের পরপরই ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। দেশের প্রথম প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই তৈরি হয় একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা নীতি ও সশস্ত্র বাহিনী। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তর অবলুপ্ত হয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থাপিত হয় তিন বাহিনীর জন্য পৃথক সদর দপ্তর। বাংলাদেশের সংবিধানের পরিচ্ছেদ-৪ এর ৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বাধিনায়কত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত করা হয় এবং আইন দ্বারা তার প্রয়োগ নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।

একথা সত্য যে, শত প্রতিকূলতা, অর্থনৈতিক সংকট, যুদ্ধবিশ্বস্ত দেশগড়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু তার জীবনের আকাতকা-সেনাবাহিনীর মর্যাদার প্রতীক বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম ব্যাচের অফিসারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে হাজির হয়ে ক্যাডেটদের কাছে জাতির পিতা তার মনের অবস্থা ব্যক্ত করেন। ক্যাডেটদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর সেই অমূল্য ভাষণের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরছি- বঙ্গবন্ধু ভাষণে বলেছিলেন, 'আজ সত্যিই গর্বে আমার বুক ভরে যায়। বাংলাদেশের মালিক আজ বাংলাদেশের জনসাধারণ। সেজন্যই সম্ভব হয়েছে আজ আমার নিজের মাটিতে একাডেমি করা। আমি আশা করি, ইনশাআলস্নাহ এমন দিন আসবে, এই একাডেমির নাম শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নয়, সমস্ত দুনিয়াতে সম্মান অর্জন করবে।' এ কথার মাধ্যমে বোঝা যায়, সেনাবাহিনী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ পরিকল্পনা ছিল এবং ভবিষ্যতে তিনি একটা মর্যাদাপূর্ণ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আজও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য সমানভাবে প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাষ্ট্রনায়ক। তিনি জানতেন, একটা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শুধু সশস্ত্র বাহিনী নয়, বৃহত্তর জনগণ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে একাত্মতা অপরিহার্য। সেজন্যই বঙ্গবন্ধু বলেছেন, 'আমার সেনাবাহিনী হবে জনগণের সেনাবাহিনী। দুয়ের মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকবে না।'

সময়ের হাত ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুর সেই জন প্রত্যাশার সমান্তরালে এসে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন। আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাগত উৎকর্ষে বিশ্বের যে কোনো বাহিনীর সঙ্গে তুলনীয়। মিসাইল, আধুনিক ট্যাঙ্ক ও গোলন্দাজ বাহিনীর সব শাখাসহ সেনাবাহিনী এখন সব উপাদান সহকারে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ২০৩০ সালের জন্য নির্ধারিত ফোর্সেস গোলকে সামনে রেখে সেনাবাহিনীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য রয়েছে নিজস্ব বিদ্যাপীঠ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে প্রথম কাতারে রয়েছে- যা, জাতি হিসেবে আমাদের গর্বিত করেছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশ এখন বাংলাদেশকে শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য একটি মডেল হিসেবে বিবেচনা করে। এছাড়াও শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কার্যক্রম জাতিসংঘসহ সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।

আমাদের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের জন্য এ দিনটি পারস্পরিক সহযোগিতা, আস্থা ও দেশ প্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন করে দেশের প্রয়োজনে আত্মোৎসর্গ করার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার দিন। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছিল বুকের তাজা রক্ত এবং জীবন, তাদের ত্যাগের মহিমা, দেশপ্রেম এবং উদাহরণ, আমাদের আগামী প্রজন্মকে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে আমাদের মাতৃভূমিকে ভালোবাসা, সেবা ও রক্ষা করার দায়িত্ব সম্পর্কে নতুন অঙ্গীকারে আবদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করবে। কাজেই এই দিনটি শুধুমাত্র কিছু আনুষ্ঠানিকতায় নয়, বরং আমাদের ঐতিহ্য, আত্মোপলব্ধি, সৌর্য, গর্ব এবং অহংকার পর্যালোচনার মাধ্যমে, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাঝেই নিহিত রয়েছে এর সত্যিকার সার্থক।

আমরা যেন এ দেশের মাটি ও মানুষের প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করতে পারি। আমাদের উত্তরসূরিদের মতো জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে আমরা যেন রাখতে পারি গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এ দেশের যে কোনো সংকটে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আমরা যেন রাখতে পারি জাতীয় আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক। এই বিশেষ দিনে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের প্রার্থনা, আমরা যেন ২৬ মার্চের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ এবং দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ থাকতে পারি।

কর্নেল ইব্রাহিম ফারুক : কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে