ভুল চিকিৎসায় মৃতু্য বাড়ছে কঠোর পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
দেশে ভুল চিকিৎসায় মৃতু্য উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। প্রতিদিনই রাজধানীসহ সারাদেশের কোথাও না কোথাও থেকে এমন খবর আসছে। গত এক বছর ধরে ভুল চিকিৎসায় মৃতু্যর ঘটনা বেশি ঘটছে। যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ভাবিয়ে তুলেছে। একইভাবে সিনিয়র বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদেরও ভাবিয়ে তুলেছে। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপারেশন ও চিকিৎসা সেবায় ত্রম্নটি আছে বলে মনে করছেন তারা। এর কারণ উদ্ঘাটন করতে না পারলে দেশের চিকিৎসা সেবায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, রোগীরা বিদেশমুখী হয়েছে, আরও বেশি হবে। কতিপয় চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ ও অবহেলায় রোগীর মৃতু্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। এদিকে ভুল চিকিৎসায় অহরহ মৃতু্যর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত টিম গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অজ্ঞানকারী ওষুধের কারণে, নাকি চিকিৎসকদের গাফিলতি, নাকি অন্য কোনো কিছু তা অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুসন্ধান টিম। তাদের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে অধিদপ্তর। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মত হচ্ছে, দেশের বিপুলসংখ্যক রোগীকে সরকারের পক্ষে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি চিকিৎসা সেবা থাকতে হবে। তবে সেবার মনোবৃত্তি থাকা বাধ্যতামূলক এবং তা মানসম্মত হতে হবে। সরকারের নিয়মনীতি মেনে পরিচালনা করতে হবে। সেই ব্যবস্থা না থাকলে অনুমোদন দেওয়া ঠিক হবে না।
সারাদেশে সরকারি হাসপাতালের আশপাশে হাজার হাজার বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। যার ৯৫ ভাগ অবৈধ। যার অধিকাংশের মালিক রাজনৈতিক দলের নেতা। এক শ্রেণির ডাক্তার সরকারি হাসপাতালে ডিউটি না করে সেখানে কাজ করেন। সব মিলিয়ে সারাদেশে চিকিৎসা সেবায় চরম অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসা খাতে রীতিমতো নৈরাজ্য বিরাজ করছে। একদিকে মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। অন্যদিকে, ভুল চিকিৎসা ও ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বেড়েছে। ভুল চিকিৎসায় বা চিকিৎসা অবহেলায় প্রায়ই রোগীর মৃতু্য ঘটছে।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে বিশ্বের অনেক দেশে টর্ট আইনে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে টর্ট আইনে বিচারের জন্য আদালতে ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তাই সাধারণত ফৌজদারি আদালতে অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তি চেয়ে বা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে হয়। এ কারণে এসব মামলার ক্ষেত্রে অন্য আইনগুলোতে থাকা অবহেলা ও ক্ষতিপূরণসংক্রান্ত বিধান এবং আদালতের নজিরের ওপর নির্ভর করতে হয়।
চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীর প্রতি অবহেলা করবেন না, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। নিজের বুদ্ধিমত্তা ও পেশাগত দক্ষতা প্রয়োগ করেই তাদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা উচিত। এ ক্ষেত্রে অধিক সাবধানতা অবলম্বন করার পরও কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে সেটা ভিন্ন কথা। চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের অবহেলা ও উদাসীনতায় ভুল চিকিৎসায় মৃতু্যর কোলে ঢলে পড়েছেন অনেক রোগী। আমরা মনে করি, যোগ্য লোককে যোগ্য জায়গায় বসাতে হবে। নইলে মৃতু্যর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়তে থাকবে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।