বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১

সুখী দেশের তালিকা অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হবে

  ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
সুখী দেশের তালিকা অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হবে

গতবারের মতো এ বছরও সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব সুখ দিবসে এবারও সুখবর নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এমনটি জানা যাচ্ছে। জাতিসংঘের বার্ষিক প্রতিবেদন 'ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস' রিপোর্ট বলছে, গত এক বছরে মানুষের মনে সুখ আরও কমেছে। উলেস্নখ্য, বুধবার এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক-এসডিএসএন। যেখানে দেখা যায়, বাংলাদেশের অবনমন ঘটেছে ১১ ধাপ।

আমরা মনে করি, এটি আমলে নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগও গ্রহণ করতে হবে। বলা দরকার, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), সামাজিক সুরক্ষা, কাঙ্ক্ষিত গড় আয়ু, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, মানবিকতা, দুর্নীতির ধারণা এবং সার্বিক দুর্দশা- এই ছয় মানদন্ডের ভিত্তিতে বিচার করে একটি দেশের মানুষের জীবন মান নিয়ে সন্তুষ্টি বোঝার চেষ্টা করা হয় এ প্রতিবেদনে। আর বিবেচনা করা হয় ইতিবাচক ও নেতিবাচক আবেগ। অন্যদিকে, সূচকে একটি দেশের অবস্থান চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে 'গ্যালপ ওয়ার্ল্ড পোল' থেকে পাওয়া তথ্য।

জানা যাচ্ছে, ১০ ভিত্তিক স্কেলে বাংলাদেশের সুখের ঝুলিতে সংগ্রহ ৩ দশমিক ৮৮৬ পয়েন্ট, আর তাতে বিশ্বের ১৪৩ দেশের মধ্যে অবস্থান ১২৯তম। আগের বছর ১৩৭টি দেশের মধ্যে ৪ দশমিক ২৮২ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ ছিল ১১৮তম অবস্থানে। তার আগের বছর বাংলাদেশের সুখের সংগ্রহে ছিল ৫ দশমিক ১৫৫ পয়েন্ট, ১৪৬ দেশের মধ্যে অবস্থান ছিল ৯৪তম। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়টিও আমলে নিতে হবে যে, হ্যাপিনেস রিপোর্ট বলছে, গত তিন বছরে জীবন মান নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের সন্তুষ্টি কমেছে অনেকটা। আর তার প্রভাবে বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ পিছিয়েছে ৩৫ পয়েন্ট। সুখী দেশের এই তালিকায় গত সাত বছর ধরেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী ফিনল্যান্ড। এ বছর দেশটির ঝুলিতে সংগ্রহ ৭ দশমিক ৭৪১ পয়েন্ট। শীর্ষ পাঁচে পরের চারটি দেশ হলো ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন ও ইসরাইল। এছাড়া ১ দশমিক ৭২১ স্কোর নিয়ে এ তালিকার সবচেয়ে অসুখী দেশ আফগানিস্তান।

আমরা মনে করি, যখন বাংলাদেশে অবস্থানে অবনমনের বিষয় সামনে আসছে তখন এটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। একইসঙ্গে আমলে নেওয়া জরুরি, যেহেতু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), সামাজিক সুরক্ষা, কাঙ্ক্ষিত গড় আয়ু, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, মানবিকতা, দুর্নীতির ধারণা এবং সার্বিক দুর্দশা- এই ছয় মানদন্ডের ভিত্তিতে বিচার করে একটি দেশের মানুষের জীবন মান নিয়ে সন্তুষ্টি বোঝার চেষ্টা করা হয়- ফলে এই বিষয়গুলো সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ। আর এসব ক্ষেত্রে কোনো সংকট থাকলে তা নিরসনেও পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

আরেকটি বিষয় অত্যন্ত উদ্বেগজনক যে, এবার সুখের সূচকে উঠে এসেছে বয়স্কদের মধ্যে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতি হারানোর প্রবণতা। গবেষণার লেখকরা একে তুলনা করেছেন পেস্নগের সঙ্গে। অন্যদিকে, এ বছরের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলে তরুণদের মনে বয়স্কদের তুলনায় সুখ বেশি। ইউরোপ ছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলে শ্রেণিভেদে সুখের বৈষম্য বেড়েছে- যা উদ্বেগ জাগাচ্ছে গবেষকদের মনে। ফলে এই দিকগুলোও আমলে নেওয়া জরুরি।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সুখী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম রয়েছে। ফলে বাংলাদেশের অবনমন ঘটেছে ১১ ধাপ। এটিকে এড়ানোর সুযোগ নেই, বরং পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং যে সব মানদন্ডের ভিত্তিতে বিচার করে একটি দেশের মানুষের জীবন মান নিয়ে সন্তুষ্টি বোঝার চেষ্টা করা হয়, সেগুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের চেয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ পৃথিবীর কোথাও নেই। এটি আমরা অবশ্যই দাবি করতে পারি। ফলে আগামী দিনে দেশ সুখী দেশের প্রশ্নে দেশের অগ্রগতি হবে- সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে