শেয়ার বাজারের দাম কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে পৌঁছেছে। এর ফলে দেশের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার দেশের শেয়ার বাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এদিন রীতিমতো বাজারে ধস নেমেছে। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৩৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেছে। ডিএসই'র মতো অপর শেয়ার বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। ফলে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা আট কার্যদিবস শেয়ার বাজারে দরপতন হলো। আর শেষ ২৪ কার্যদিবসের মধ্যে ২১ কার্যদিবসেই দরপতন দেখতে হলো বিনিয়োগকারীদের। এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে একই সপ্তাহেই ডিএসই'র বাজার মূলধন ৪৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে যায়। আর টানা চার সপ্তাহের পতনে বাজার মূলধন কমে ৭০ হাজার কোটি টাকার ওপরে এবং ডিএসই'র প্রধান সূচক কমে ৫০০ পয়েন্টের ওপরে। এই পরিস্থিতি গত মঙ্গলবার শেয়ার বাজার লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই'র প্রধান সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে ৫ মিনিটের মধ্যে দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এবং লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম কমার তালিকা বড় হয়। ফলে রীতিমতো ধস দিয়ে শেয়ার বাজারের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৪১টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৩১৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত থাকে। এতে ডিএসই'র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ৮৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮১৪ পয়েন্টে নেমে গেছে।
এর মাধ্যমে ২০২১ সালের ২৩ মে'র পর সূচকটি সর্বনিম্ন অবস্থানে অবস্থান করছে। ২০২১ সালের ২৩ মে ডিএসই'র প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ৭৮৭ পয়েন্ট। এরপর সূচকটি আর এত নিচে নামেনি। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। এর মধ্যে দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করেছে। এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
আমরা যদি অতীতের দিকে তাকাই তা হলে দেখতে পাব, কোনো কোনো বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছে। শেয়ার বাজারের ধস কীভাবে ঠেকানো যায় সে জন্য দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এর কোনো অন্য বিকল্প নেই।