বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
পাঠক মত

শিশুদের মানসিক শক্তি বাড়ানো জরুরি

  ১৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শিশুদের মানসিক শক্তি বাড়ানো জরুরি

শক্তিবৃদ্ধি হওয়া অর্থে বলবর্ধক শব্দটির সঙ্গে পরিচিত আমরা। অন্যদিকে শিশুদের মানসিক শক্তি বাড়ানোর একটি অন্যতম প্রক্রিয়া বলবর্ধক আমরা অনেকেই জানি না, জানলেও প্রয়োগ করার চেষ্টা করি না। খ্যাতনামা আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী বি.এফ. স্কিনার আচরণ নিয়ে গবেষণা করেন ও তার তত্ত্বের মধ্যে খুব চমৎকার একটি শব্দ বলবর্ধক বা জবরহভড়ৎপবসবহঃ উলেস্নখ করেন। যে বিষয়টা কোনো প্রতিক্রিয়ায় ওপর প্রভাব ফেলে সে বিষয়টাই বলবর্ধক। বলবর্ধক এমন একটি অবস্থা যা শিশুকে অনুশীলনের দিকে ধাবিত করে ও কর্ম সম্পাদনে ব্যস্ত রাখে।

বলবর্ধক শিশুদের প্রেষণা নির্মাণ করে। অর্থাৎ শিশুদের কর্মসম্পাদনকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমুখী করে, লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিশুকে কর্মে ব্যস্ত রাখে, আকাঙ্ক্ষা-আগ্রহ সৃষ্টি করে। ফলাফলস্বরূপ একটা শিশু সক্রিয় হয়।

বাবা-মায়ের পিটুনি, শিক্ষকদের বকা, পরীক্ষার ফলাফল, ঈদ-পূজার পোশাক, ভ্রমণ, খেলাধুলা, খাবার সবই জবরহভড়ৎপবসবহঃ বা বলবর্ধকের অন্তর্ভুক্ত। অনেক উপায়ে বলবর্ধক তৈরি করা সম্ভব হলেও মূলত বলবর্ধক বা জবরহভড়ৎপবসবহঃ শিশুদের মধ্যে দুই ভাবে প্রয়োগ করতে পারি। যথা:- ইতিবাচক বলবর্ধক বা চড়ংরঃরাব জবরহভড়ৎপবসবহঃ এবং নেতিবাচক বলবর্ধক বা ঘবমবঃরাব জবরহভড়ৎপবসবহঃ।

ইতিবাচক বলবর্ধক: কোনো কাজের জন্য পছন্দের কিছু শিশুকে দেওয়া ইতিবাচক বলবর্ধক। যেমন: যদি একটা শিশু কোনো বিষয় লেখার পর তার লেখার স্থানে াবৎু মড়ড়ফ, বীপবষষবহঃ দেওয়া হয় অথবা শিশু গান গাওয়া বা ইতিবাচক যে কোনো কিছু উপস্থাপন করার পর মন্তব্য করা হয় অনেক সুন্দর গেয়েছ, অনেক সুন্দর উপস্থাপন করো তাহলে শিশু অনেক খুশি হয়। আবার তুমি যদি আজ বিদ্যালয়ে দেওয়া বাড়ির কাজ সঠিকভাবে কর তাহলে আগামীকাল পার্কে বেড়াতে নিয়ে যাব। এভাবে শিশুর কাজের প্রতি প্রেষণা বৃদ্ধি করতে পারি- তাই এগুলো ইতিবাচক বলবর্ধক।

নেতিবাচক বলবর্ধক: কোনো প্রতিক্রিয়ার জন্য পছন্দের কিছু নিয়ে যাওয়া, ভুল হওয়ার পর ইতিবাচক শাস্তি দেওয়াকেই নেতিবাচক বলবর্ধক বলে। যেমন: তুমি আজ ভালোভাবে গোসল না কর, পরিষ্কার পোশাক পরিধান না কর, বাড়ির কাজ সঠিকভাবে শেষ না কর-তোমাকে টিভি দেখতে দেব না। আবার কোনো একদিন শিক্ষকের দেওয়া বাড়ির কাজ শেষ না করলে শিক্ষক কোনো বকা বা আঘাত না দিয়ে শাস্তিস্বরূপ ওই বাড়ির কাজটাই দ্বিতীয়বার, তৃতীয়বার করতে দেয় এবং শিশু পরের দিন সম্পন্ন করে, তাহলে একই সঙ্গে শিশু শিক্ষার্থী শাস্তি পায় ও লাভবান হয়।

ওপরের আলোচনাগুলো আমরা শিশুদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারি। তবে আমরা জানি কোনোকিছুরই মাত্রাতিরিক্ত ভালো নয়, মাত্রাতিরিক্ত হলে ক্রিয়ার পরিবর্তে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াটাই বেশি হয়। তাই সবকিছুর মতো জবরহভড়ৎপবসবহঃ এর মাত্রাটিও খেয়াল রাখা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ একটা শিশুকে যদি সব কাজের জন্য পুরস্কার করার শর্ত দেই বা ব্যয়বহুল পুরস্কার দেই তাহলে একটা সময় সে পুরস্কার ছাড়া কিছুই বুঝবে না। তাই আমরা জবরহভড়ৎপবসবহঃ এর মাধ্যমে শিশুদের সক্রিয় করব কিন্তু সেটা হতে পারে আমাদের মিষ্টি মিষ্টি কথা, ধন্যবাদ, মৌখিক অভিনন্দন, হাততালি, একটু বেশি আদর বা এমন অনেক কিছু।

সুমন চৌধুরী

শিক্ষার্থী

শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে