অবৈধ মজুতদার দৌরাত্ম্য রোধ হোক
প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়; তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে। অথচ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্নআয়ের মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত, পবিত্র রমজান মাস আসলে পণ্যর দাম নিয়ে কী যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তা অজানা নয়। এ সময় নানা পণ্যের দাম বাড়ার ঘটনা ঘটে। ফলে এই পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সম্প্রতি জানা যাচ্ছে, আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অবৈধ মজুতদার ও বাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান এ তথ্য জানিয়েছেন।
আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। কেউ যেন নিজেদের স্বার্থ হাসিলে মানুষকে জিম্মি করতে না পারে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। বলা দরকার, আসন্ন রমজানে ঢাকা সিটিতে কেউ যাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ে কারসাজি করতে না পারে সে জন্য নজরদারি করা হচ্ছে উলেস্নখ করে সিআইডি প্রধান বলেছেন, ১২টি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা মাঠে কাজ করছে, নজরদারি চালাচ্ছে। আর যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন তাদের ওপর বিশেষ নজরদারি থাকছে বলেও জানা যাচ্ছে। এছাড়া কেউ যাতে দাম বাড়াতে না পারেন সেটিই এই ১২ টিমের কাজ। যে ব্যবসায়ীরা মজুতদারি, কালোবাজারি করছেন নজরদারিতে ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এটাও আলোচনায় এসেছে।
আমরা বলতে চাই, নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। স্মর্তব্য যে, নানা সময়েই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং বিস্তর অভিযোগও সামনে আসে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সেই মোতাবেক উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। আর আসন্ন রমজানে কোনোভাবেই যেন বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।
স্মর্তব্য যে, বিভিন্ন সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগও উঠেছিল যে, সরকার কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও সেই দামে কোথাও পণ্য পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। অথচ এটা আমলে নেওয়া সমীচীন, নিত্যপণ্যের দাম যদি চড়া হয়, তবে তা কতটা উদ্বেগের! মনে রাখা দরকার, এর আগে ক্রেতার চাপের সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগও নতুন নয়। ফলে বিভিন্ন অজুহাতকে সামনে রেখে কোনো সিন্ডিকেট বা অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে না পারেন সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, যখন প্রয়োজনীয় দ্রব্যর দাম বৃদ্ধি পায়, তখন জনসাধারণের ওপর তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ফলে সার্বিক চিত্র আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তৎপরতা বজায় রাখা এবং নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। বিশেষ করে অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন মানুষকে জিম্মি করতে না পারেন সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে। কৃত্রিম সংকটসহ যে কোনো কারণে কেউ যেন ইচ্ছামতো দাম বাড়াতে না পারেন, সেই লক্ষ্যে মনিটরিং অত্যন্ত জরুরি। একপক্ষ আরেক পক্ষের ওপর দায় চাপানো কিংবা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ কিংবা চাহিদা বেশি বলে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে এমনটিও কাম্য নয়।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যদি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে দিশাহারা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে এমনটিই স্বাভাবিক। ফলে আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অবৈধ মজুতদার ও বাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে সিআইডি- এটিকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক। যথাযথ বাজার মনিটরিং করা হোক। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।