সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে, যেখানে বহুতল একটি ভবনে অগ্নিকান্ডে অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়। আর এরই মধ্যে ঘটল আবারো অগ্নিকান্ডের ঘটনা। যদি এভাবে একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকে তবে পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। তথ্য মতে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার ইছাপুর এলাকায় এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে মিলের ১ নম্বর গুদামে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে যে, এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এক লাখ টন চিনি পুড়ে ছাই হয়েছে। আগুন লাগার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশনের ২০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে। শিল্প গ্রম্নপটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আসন্ন রমজান ঘিরে মজুত করা হয়েছিল এসব অপরিশোধিত চিনি। প্রসঙ্গত, এর আগে গত শুক্রবার নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডে এস আলম গ্রম্নপের একটি হিমাগারেও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
আমরা বলতে চাই, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিন। একের পর এক যখন ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছেই- তখন সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। স্মর্তব্য যে, এর আগে বিভিন্ন সময়ে হৃদয়বিদারক এবং ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই অগ্নিকান্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনা আমলে নিতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সব ধরনের উদ্যোগও অব্যাহত রাখতে হবে। যদি একের পর এক আগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকে, তবে তা কতটা ভয়ানক ও আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে বলাই বাহুল্য। এবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আগুনের সূত্রপাত এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য।
এ কথা বলা দরকার, বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, অনেক মানুষ চলে গেছে না ফেরার দেশে। পত্রপত্রিকায় এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল যে, নানা কারণেই বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েক বছরে শুধু কেমিক্যালের কারণে অনেক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। বস্তিতেও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কেমিক্যাল গোডাউন, আধুনিক বহুতল, শপিংমলসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার, বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও সতর্ক না হওয়ায় অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে এড়ানোর সুযোগ নেই।
উলেস্নখ্য, কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেক সংলগ্ন ইছাপুর এলাকায় ১১ মেগাওয়াটের এস আলম পাওয়ার পস্নান্টের পাশেই এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলটি অবস্থিত। পাওয়ার পস্ন্যান্টের বিদু্যৎ দিয়েই চিনি কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম চলে। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বিকাল ৪টায় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে পটিয়া, চন্দনপুরা ও আগ্রাবাদের আরও ৯টি ইউনিট আগুন নির্বাপণে যোগ দেয়। এরপরও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় চন্দনপুরা ও কর্ণফুলী ফায়ার সার্ভিসের আরও আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়।
সর্বোপরি বলতে চাই, এবারের অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি আমলে নিন। একইসঙ্গে এই ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা একের পর এক কেন ঘটছে সেটাও এড়ানো যাবে না। বিভিন্ন সময়, নানা কারণে অগ্নিকান্ডের যেসব ঘটনা ঘটেছে- প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে- এর চেয়ে ভয়ানক আর কীবা হতে পারে! যখন গ্রাম থেকে শহর, বস্তি থেকে শুরু করে আবাসিক ও বাণিজ্যিক বহুতল ভবন, দোকানপাট, গুদাম, মার্কেট কোনো কিছুই আগুনের লেলিহান গ্রাস থেকে মুক্ত নয়- তখন এই প্রশ্নও অযৌক্তিক নয় যে, অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাচ্ছে না কেন! সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।