মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গ্যাস ও বিদু্যতের দাম বৃদ্ধি

উপেক্ষিত জনস্বার্থ
  ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
গ্যাস ও বিদু্যতের দাম বৃদ্ধি

গ্যাস ও বিদু্যতের দাম বেড়েছে। ফলে এর প্রভাব আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। তথ্য মতে, রোজা ও গ্রীষ্মকাল আসার আগেই বিদু্যতের দাম প্রতি ইউনিটে ৩৪-৭০ পয়সা পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিদু্যতের দামের বিষয়টি কার্যকর করা হবে বলেও জানা যাচ্ছে। মূলত, ভর্তুকি থেকে ধীরে ধীরে বের হওয়ার জন্যই বিদু্যতের 'দাম সমন্বয়' করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, বিদু্যতের দাম বাড়ানোর আগে আরেক দফা বাড়ল বিদু্যৎ উৎপাদন খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম। সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের বিদু্যৎকেন্দ্রের জন্য প্রতি ইউনিট গ্যাসের বর্তমান দাম ১৪ টাকা। নতুন করে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ টাকা ৭৫ পয়সা। নতুন দাম চলতি ফেব্রম্নয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলেও জানা যাচ্ছে। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের দামও মার্চের প্রথম সপ্তাহে সমন্বয় করা হবে। মঙ্গলবার সরকারের নির্বাহী আদেশে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বিদু্যৎ উৎপাদন খাতে গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা করেছে বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদু্যৎকেন্দ্রের (ক্যাপটিভ) জন্য ইউনিট প্রতি গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা করা হয়েছে।

বলা দরকার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যখন দেশের মানুষ দিশেহারা তখন দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে বিদু্যতের দাম- এটাও আলোচনায় এসেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি এবং ফেব্রম্নয়ারি মাসে তিনবার বিদু্যতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। যার প্রভাব এখনো রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে সবকিছুর ওপর। উলেস্নখ্য, সবশেষ ফেব্রম্নয়ারি মাসের ২৭ তারিখে ফের ইউনিট প্রতি সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা বাড়ানো হলো- যা চলতি বছরের মার্চ থেকেই কার্যকর হবে। এ নিয়ে বর্তমান সরকারের ১৫ বছরের মেয়াদে গ্রাহক পর্যায়ে এ পর্যন্ত ১৪ বার বাড়ানো হলো বিদু্যতের দাম। এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছে ১২ বার। আমরা বলতে চাই, গ্যাস, বিদু্যতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়ে নানা ক্ষেত্রেই। তৈরি পোশাক, শিল্প উৎপাদন থেকে শুরু করে জনজীবনের প্রায় সর্বত্র। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

উলেস্নখ্য, এর আগে গত বছরের ১৮ জানুয়ারি নির্বাহী আদেশ জারি করে গ্যাসের দাম গড়ে ৮২ শতাংশ বাড়ানো হয়। ওই সময় সর্বোচ্চ ১৭৯ শতাংশ বাড়ানো হয় বিদু্যৎ খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম। একই সময় শিল্পেও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে তিন গুণ করা হয়- যা গত বছরের ফেব্রম্নয়ারি থেকে কার্যকর হয়। গত বছর ৫ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে বিদু্যৎ খাতের গ্যাসের দাম ১৫ টাকা করা হয়েছিল। আর ক্যাপটিভে ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছিল। আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, দাম বৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে যথাযথ উদ্যোগ জারি রাখা। যদিও দাম বাড়ালে গ্রাহকরা যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন, তাই বিদু্যতের দাম ধীরে ধীরে সমন্বয় করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী যা সামনে এসেছে। প্রসঙ্গত, এটা কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না যে, গ্যাস বা বিদু্যতের মূল্যবৃদ্ধিতে দুর্ভোগে পড়ে দেশের মানুষ। কেননা, এর ফলে দ্রব্যমূল্য বাড়ারও আশঙ্কা তৈরি হয়। নানা কিছুতে প্রভাব পড়ে। দাম বাড়ার বিষয়টিকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এ কথা অস্বীকারের সুযোগ নেই- বাংলাদেশে একবার কোনো জিনিসের মূল্য বাড়লে তা আর কমে না। আর এবার যখন বিদু্যত ও গ্যাসের দাম বাড়ল, তখন এ পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। কেননা, দ্রব্যমূল্য ও সেবামূল্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। আর শেষ পর্যন্ত তা বহন করতে হয় ভোক্তা সাধারণকে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে যথাযথ উদ্যোগ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে