জানুয়ারিতে দুর্ঘটনায় নিহত ৫৩৪ কার্যকর উদ্যোগ নিন
প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনায় মৃতু্য থেমে নেই। ঘাতক চাকার নিচে একের পর এক মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনায় ৫৩৪ নিহত ও ৪ হাজার ৪৬২ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটি বলছে, জানুয়ারিতে শুধু ৫২১ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত এবং ১ হাজার ৫৪ জন আহত হয়েছে। জানুয়ারি মাসে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) ১ হাজার ১৫৩ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৭২ জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৭১ জন, কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৫৮ জন, নারায়ণগঞ্জে খানপুর হাসপাতালে ৪২০ জনসহ মোট ৩ হাজার ৩৭৪ জন যাত্রী ও পথচারী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সেই হিসাবে হাসপাতালের তথ্যসহ আহত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৪২৮ জন।
জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উলেস্নখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে- ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি; মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচল; সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা ও রাতের বেলায় ফক লাইটের অবাধ ব্যবহার; সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণ ত্রম্নটি, ফিটনেস যানবাহন ও অদক্ষ চালকের হার ব্যাপক বৃদ্ধি; ফুটপাত বেদখল, যানবাহনের ত্রম্নটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।
দুর্ঘটনার প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটা ব্যাংক চালু করতে হবে। এ ছাড়াও স্মার্ট গণপরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, মোটর সাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। রাতের বেলায় চলাচলের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে সড়কে হাজার হাজার মানুষের মৃতু্য ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর চলমান গতানুগতিক কার্যক্রম অডিট করে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত করা, প্রাতিষ্ঠানিক অকার্যকারিতা সংস্কার করাও জরুরি।
যেভাবে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে এবং বেড়ে চলেছে লাশের সংখ্যা- তা সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। বরং সড়ক কতটা ভীতিপ্রদ হয়ে উঠেছে তা আমলে নিতে হবে। আমরা মনে করি, কেন সড়ক নিরাপদ হচ্ছে না, কেন বাড়ছে লাশের সংখ্যা- এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।
\হমনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। দুর্ঘটনায় মৃতু্যর হার কমাতে হলে দোষীদের তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণকেও নৌ, রেল ও সড়ক পথে ভ্রমণ ও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরো সচেতন হতে হবে। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে।