নিয়ন্ত্রণহীন বাজার কার্যকর উদ্যোগ নিন
প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
বাজারে নিত্যপণ্যের দাম আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে দেশের চিনির বাজারে। শুল্কহ্রাসের পরও বেড়েই চলছে রমজানে অতিপ্রয়োজনীয় এই ভোগ্যপণ্যের দাম। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দাম বৃদ্ধির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর তা প্রত্যাহার করা হলেও বাজারে তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। এতে রাতারাতি খোলা চিনির দাম ১৬০ টাকা হয়েছে। একইভাবে বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা এলেও দাম কমেনি। শুক্রবারও রাজধানীর বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১২০ টাকার দরে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু এর প্রভাব এখনো বাজারে পড়েনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিকৃত পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত এর কোনো প্রভাব পড়বে না। এ ছাড়াও শীতজুড়েই সবজির দাম ছিল সাধারণের নাগালের বাইরে। রমজান যত ঘনিয়ে আসছে ততই দাম বাড়ছে মাংসসহ সংশ্লিষ্ট খাদ্যপণ্যের। রমজানে দাম সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরের শুল্কহ্রাস করা হলেও বাজারে এখন পর্যন্ত এর প্রভাব দেখা যায়নি। যদিও লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে তা কার্যকর হবে ১ মার্চ থেকে। শুল্কহ্রাসের পরও বৃহস্পতিবার দুপুরে সরকারি মিলে চিনির দাম কেজিতে ২০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণায় অস্থিরতা তৈরি হয় চিনির বাজারে। তবে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করে শিল্প মন্ত্রণালয়। গত ৪ মাসে চিনির দাম বেড়েছে খুচরা পর্যায়ে প্রায় ২৮ টাকা।
আমরা মনে করি, ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বাজারে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অসহায় জনগণকে জিম্মি করে তারা পকেট কাটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এর আগে তারা চাল চিনি ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। লবণের ক্ষেত্রেও চেষ্টা চালিয়েছিল, সফল হয়নি। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে।
বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। কেবল রমজানে নয়, সারা বছর বাজার মনিটরিং করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।