মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ড পুনরাবৃত্তি রোধ হোক

  ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ড পুনরাবৃত্তি রোধ হোক

অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা কতটা ভয়াবহ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যখন একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে, তখন তা আমলে নেওয়ারও কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আবারও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে, রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় একটি বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটে। আর এই ঘটনায় ৯৯৯-এর কলে ৮০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক এ তথ্য জানান। তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ওয়ারীর একটি বহুতল ভবনে আগুনের খবর জানিয়ে একজন কলার ৯৯৯-এ কল করে জরুরি সহায়তা চান। এরপর ৯৯৯-এর সদর দপ্তর থেকে সিদ্দিকবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ঘটনাটি জানানো হয়। খবর পেয়ে সিদ্দিকবাজার ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবনের চারতলার বাইরের দিক থেকে কাচ ভেঙে হাইড্রলিক ল্যাডারের সাহায্যে ৮০ জনকে জীবিত উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনে। জানা গেছে, ১০তলা ভবনের ৪ তলায় আগুনের ঘটনা ঘটে। ভবনের আগুন সম্পূর্ণরূপে নিভিয়ে ফেলা হয় এবং কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানা যায়।

আমরা বলতে চাই, ৯৯৯-এ কল করা, পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি- যা আমলে নিতে হবে। একইসঙ্গে অগ্নিকান্ডের ঘটনা কেন ঘটল সেটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এটা মনে রাখা দরকার, যে কোনো ধরনের অসতর্কতা বা নানা কারণেই ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটতে পারে, ফলে সচেতনতা বাড়ানোসহ অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়নে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, বিভিন্ন সময়েই দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছেই। মার্কেট, বস্তি ও বিভিন্ন কারখানা থেকে শুরু করে উঁচু ভবনে নানাভাবেই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন সময়ে হৃদয়বিদারক এবং ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনাও ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। এর আগে জানা গিয়েছিল, সরকারের নীতিনির্ধারক মহল, দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা অগ্নিকান্ড প্রতিরোধে সচেতনতার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন। বড় বড় অগ্নিকান্ডের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তারা বলছেন, আমাদের অনেক ভবন ও অবকাঠামো আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে। গ্যাসচালিত যানবাহনের অধিকাংশ একেবারে ঝুঁকিমুক্ত, তাও বলা যাবে না। মূলত যত দুর্ঘটনা ঘটছে, এর জন্য মানুষের দায় ও দায়িত্ব বেশি। এছাড়া দুর্ঘটনা-পরবর্তী দ্রম্নত উদ্ধারকাজে আমাদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি যেসব সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো দ্রম্নত দূর করতে হবে- এ সংক্রান্ত আলোচনাও উঠে এসেছিল। ফলে সামগ্রিকভাবে অগ্নিকান্ড পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই।

স্মর্তব্য, এর আগে রাজধানী ঢাকার বেশ কয়েকটি মার্কেটসহ সারা দেশের বিভিন্ন ভবন অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে বলে আলোচনায় এসেছে। ফলে শুধু রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম নয়, সারা দেশে যেসব ভবন অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এটা আমলে নেওয়া দরকার, অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে রেহাই পায়নি বস্তি থেকে শুরু করে মার্কেট কেমিক্যাল গোডাউন কিংবা আধুনিক বহুতল ভবনও। বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও সতর্ক না হওয়ায় অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

সর্বোপরি বলতে চাই, মার্কেট, পস্নাস্টিক কারখানা, কেমিক্যাল গোডাউন থেকে শুরু করে আধুনিক বহুতল ভবন, কারখানা, বস্তিসহ বিভিন্নভাবে অগ্নিকান্ডের যে ঘটনা ঘটেছে- প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এটাও আলোচনায় এসেছিল যে, অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে এর চেয়ে ভয়ানক আর কী হতে পারে! যখন গ্রাম থেকে শহর, বস্তি থেকে শুরু করে আবাসিক ও বাণিজ্যিক বহুতল ভবন, দোকানপাট, গুদাম, মার্কেট কোনো কিছুই আগুনের লেলিহান গ্রাস থেকে মুক্ত নয়- তখন এই প্রশ্নও অযৌক্তিক নয়, অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাচ্ছে না কেন! ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে