রমজানে খাদ্যপণ্য দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়, তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই পণ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির বিষয় বারবারই আলোচনায় আসে। অথচ পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। এছাড়া পবিত্র রমজান মাস এলেই বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার ঘটনা ঘটে। প্রসঙ্গত, প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, রোজা শুরু হতে এখনো কয়েক সপ্তাহ বাকি থাকলেও পবিত্র সংযমের মাসে খাদ্যসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আগেভাগেই একগুচ্ছ উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে নানা কৌশলী পদক্ষেপ নিয়ে বাজার তদারকি সংশ্লিষ্ট ১৩টি সংস্থা মাঠে নেমেছে। বিশেষ করে শুল্ক কমানো হয়েছে ইফতারি সামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় বেশ কয়েকটি খাদ্যপণ্যের। রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার লাগামহীন হবে না বলে আমলাদের পাশাপাশি বড় ব্যবসায়ীরাও আশ্বাস দিয়েছেন। প্রয়োজন হলে জরুরি আইন প্রয়োগ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। ফলে এই বিষয়গুলো আশাব্যঞ্জক।
কিন্তু এটাও আমলে নেওয়া দরকার, বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের পরও রমজানে বাজার স্থিতিশীল থাকবে কিনা তা নিয়ে কাটছে না আস্থার সংকট। বরং রোজা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে পালস্না দিয়ে নানামুখী শঙ্কা, সংশয় ও আস্থাহীনতা আরও বাড়ছে। খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে মাংস, ডিম, আটা-ময়দা, ডাল, ছোলা, মসলা, চিনি ও খেজুরের দাম। যদিও দাম নিয়ন্ত্রণে চাল, চিনি, ভোজ্যতেল ও খেজুরের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা কমানো হলেও তা কার্যকর হবে পহেলা মার্চ থেকে এমনটি জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে, এটাও আমলে নিতে হবে, বাজার সংশ্লিষ্ট ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে না পারলে শুল্ক ছাড়সহ নানা পদক্ষেপ নিয়েও বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। সবার আগে সরবরাহ ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।
আমরা বলতে চাই, রমজানে অযৌক্তিকভাবে কেউ যাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ জরুরি। যখন জানা যাচ্ছে, নানা কৌশলী পদক্ষেপ নিয়ে বাজার তদারকি সংশ্লিষ্ট ১৩টি সংস্থা মাঠে নেমেছে। তখন তা আশাব্যঞ্জক। এছাড়া বলা দরকার, রোজার বাজারে দেখা যায় প্রায় প্রতি বছরই দাম বাড়ে নানা পণ্যের। ফলে এবারো যদি রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীরা কিংবা কুচক্রীরা কারসাজিসহ মানুষকে জিম্মি করতে চেষ্টা করে, তবে তা কতটা আশঙ্কাজনক হবে সেটা আমলে নিতে হবে। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে।
স্মর্তব্য, রমজান মাসসহ বিভিন্ন সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং নানা ধরনের অভিযোগও বিদ্যমান। ফলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সেই মোতাবেক উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। এছাড়া এটাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার, বিভিন্ন সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগও উঠেছিল যে, সরকার কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও সেই দামে কোথাও পণ্য পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। অথচ এটা আমলে নেওয়া সমীচীন, নিত্যপণ্যের দাম যদি চড়া হয়, তবে তা কতটা উদ্বেগের! মনে রাখা দরকার, এর আগে ক্রেতার চাপের সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগও নতুন নয়। ফলে বিভিন্ন অজুহাতকে সামনে রেখে কোনো সিন্ডিকেট বা অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন দাম বাড়াতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
সর্বোপরি বলতে চাই, রমজানে অযৌক্তিকভাবে কেউ যাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারে, সেটি আমলে নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। যদি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে দিশেহারা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে এমনটি স্বাভাবিক। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেয়া সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; একইসঙ্গে নিতপ্যণের বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।