১ লাখ ২০ হাজার মাদক কারবারি গ্রেপ্তার উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে
প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ও ভয়ংকর ছোবল দেশের সবাইকেই উদ্বিগ্ন করেছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী, তারা অন্ধকারে পথ হারিয়েছে। মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়। গত বছর সারাদেশে ৯৭ হাজার ২৪১টি মামলা দায়ের করে এক লাখ ২০ হাজার ২৮৭ জন অবৈধ মাদক চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এইচ এম বদিউজ্জামানের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। মাদক নির্মূলে সারাদেশে অভিযান পরিচালনাসহ চাহিদা হ্রাস, সরবরাহ হ্রাস ও মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দানসহ বহুবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। দেশে বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদকদ্রব্য ইয়াবার অনুপ্রবেশ ঘটে মিয়ানমার থেকে এবং ভারত থেকে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইনজেক্টিং ড্রাগ অনুপ্রবেশ করে বলেও জানান মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি,র্ যাব, কোস্ট গার্ড, ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের সমন্বয়ে কক্সবাজার ও টেকনাফে ইয়াবা পাচারবিরোধী টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর আগে বলেছেন, আমরা প্রতি ৩ মাস পরপর তালিকা তৈরি করি। এরপর ওই তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও তালিকা তৈরি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই তালিকা ধরেও সমন্বয় করে কাজ করা হয়। এর আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। ওই তালিকা অনুযায়ী অভিযান শুরু করা হয়। এতে অনেকেই গা ঢাকা দেন। ধারণা করা হচ্ছে অভিযানের জোরদারের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের মাদকগুলোর মধ্যে- হেরোইন, কোকেন, ইয়াবা, আইস, আফিম, গাঁজা, ফেনসিডিল, বিয়ার, কেটামিন, তামাক, বিড়ি, সিগারেট, স্পিড, ঘুমের বড়ি, তুসকা ইত্যাদি। এসব মাদকদ্রব্য আমাদের সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আমাদের দেশের যুবসমাজ বিভিন্ন কারণে মাদকসেবন করে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে- যা খুবই পরিতাপের বিষয়। বাংলাদেশে ইয়াবা আর ফেনসিডিলের বাজার তৈরি হওয়ায় মিয়ানমার এবং ভারত সীমান্তে অসংখ্য ইয়াবা আর ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠছে। এসব কারখানায় বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্য মিয়ানমার মরণনেশা ইয়াবা এবং ভারত থেকে ফেনসিডিল উৎপাদন করে তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা হচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই, এসব দেশে মাদক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্যই। বাংলাদেশ ঘেঁষা সীমান্তে মিয়ানমারে অসংখ্য ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। সেসব কারখানায় কোটি কোটি পিস ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। অবাক করা ব্যাপার, মিয়ানমারের মানুষ, সেখানকার যুবসমাজ খুব একটা ইয়াবা আসক্ত নয়। কোনো কোনো এলাকায় ইয়াবা কী তা সেখানকার অধিবাসীরা জানেনই না। মূলত বাংলাদেশিদের জন্যই সেখানে ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে দেশের অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। ধারণা করা যাচ্ছে, এই সংখ্যা অনেক। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা যাবে না।