মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বেপরোয়া চবি ছাত্রলীগ দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বেপরোয়া চবি ছাত্রলীগ দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

অনেক দিন থেকেই বেপরোয়া চবি ছাত্রলীগ। বারবার সংঘর্ষে জড়িয়ে আলোচনায় এসেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগ। গত ২৬ মাসে ৩৩ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৭৪ জন। ২০২২ সালে ১১ বার সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন ১০৪ জন। ২০২৩ সালে সংঘটিত ১৫ সংঘর্ষে আহত হন ১৩০ জন। সর্বশেষ ২০২৪ সালে সংঘটিত ৭ দফা সংঘর্ষে আহত হন ৪০ জন। সংঘর্ষের সময় নেতাকর্মীরা দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ও ককটেল হাতে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন পরিস্থিতি, শিক্ষা বিকাশের অন্তরায়।

এসব সংঘর্ষের পেছনে তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। কারণ তিনটি হলো- কমিটির পদে আসতে শক্তি প্রদর্শন ও কমিটি না থাকা; চবি প্রশাসন থেকে ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রিক আর্থিক সুবিধা আদায় এবং প্রশাসনের শক্ত অবস্থান না থাকা। এ পরিস্থিতির জন্য শিক্ষকদের দলাদলিও অনেকটা দায়ী।

উলেস্নখ্য, চবিতে ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২ মার্চ শুরু হবে। এর আগে গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত চার দফা সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাসে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ ছাড়া চবি শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষকদের একটি অংশ ভিসিবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে গেলেও একটি অংশ চায় নির্বাচন। এ নিয়েও শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি রয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার আগে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়া অস্থিরতা নতুন করে ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। তাদের রাজনীতি মূলত দুই অংশে বিভক্ত। এ গ্রম্নপগুলো নিজেদের শক্তিমত্তা দেখানোর জন্য অধিকাংশ সময় সংঘর্ষে জড়াচ্ছে।

\হচবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে সংঘাতে জড়াচ্ছে ছাত্রলীগের উপপক্ষগুলোর নেতাকর্মীরা। এখানে মূলত পেশিশক্তি প্রদর্শন ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব। চবি প্রশাসন থেকে বিভিন্ন বাহানায় আর্থিক সুবিধা নেওয়ার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এ ধরনের সংঘর্ষগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয় বলে ক্যাম্পাসে প্রচলিত আছে। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য পানির ব্যবস্থা, সিট পস্ন্যান সম্পর্কে দিকনির্দেশনাসহ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে ভর্তি ইচ্ছুকদের সহায়তার মাশুল হিসেবে আর্থিক সুবিধা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এখানে বলা প্রয়োজন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয় গত ২৩ সেপ্টেম্বর। অক্টোবরে নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা নেয় ছাত্রলীগের দপ্তর সেল। এর পর থেকেই নেতৃত্বে আসতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন আগ্রহী ছাত্রলীগ নেতারা। মূলত নেতৃত্বহীনতার কারণেই ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খল ছাত্রলীগ। উপপক্ষগুলোর নেতাকর্মীরা যে যার মতো তৎপরতা চালাচ্ছেন ক্যাম্পাসে। এতে সংঘাত-সংঘর্ষ লেগেই আছে এই উচ্চ বিদ্যাপীঠে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে দ্রম্নত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। শিগগির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।

আমরা মনে করি, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির প্রশ্ন। প্রশাসনকে এ ব্যাপারে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে