নদী ও রেললাইনের পাশের বস্তি থেকে স্বস্তি হবে কবে?
প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের অধিকাংশ রেললাইনের পাশের এলাকাগুলো এবং নদীপার অঞ্চলগুলো বস্তি এলাকা হয়ে থাকে। যেখানে বসবাস করে সব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষরা। মূলত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা- এসব অধিকারগুলো মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে আমরা ছোট থেকে পড়ে এসেছি। তবে এখনো দেশের বড় একটি অংশ এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের থাকার নেই কোনো জায়গা, রয়েছে পুষ্টিযুক্ত খাদ্যের অভাব, বস্ত্রের অভাব, নেই অন্তত প্রাথমিক শিক্ষাও এবং তারা কেউই সঠিক ও সম্পূর্ণ চিকিৎসাসেবা পায় না। বাসস্থানের অভাবে তারা অবস্থান করে সরকারি জায়গাগুলোতে, নদীপার, রেললাইনের পার্শ্ববর্তী জায়গাসহ ইত্যাদি স্থানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করে থাকে। অর্থ, খাবার ইত্যাদির অভাবে তারা মানুষের কাছ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করছে। অনেকেই জড়িয়ে যাচ্ছে নেশার সঙ্গে। অনেকেই জড়াচ্ছে ছিনতাই করা থেকে নানা রকম সামাজিক অপকর্মে। এ ছাড়াও নদীপার এলাকাগুলোতে দেহব্যবসার মতো নিকৃষ্ট কাজে জড়িত ব্যক্তিদেরও দেখা যায়। বস্তি এলাকাগুলোতে এলাকার অনেক ক্ষমতাশীল ব্যক্তিরা করছে চাঁদাবাজি। এ ছাড়াও চিকিৎসাসেবার অভাবে অনেকেই মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েও চিকিৎসা পাচ্ছে না। বস্তি এলাকাগুলোতে জন্মানো শিশুরা ছোট থেকেই অবহেলায়, অপুষ্টিতে বেড়ে উঠছে। এমনকি তারা প্রাথমিক শিক্ষায়ও শিক্ষিত হচ্ছে না, যা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক বড় ধরনের দুর্যোগ বয়ে আনছে। বস্তি এলাকার মানুষের পুনর্বাসনে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ একদম নেই বললেই চলে। এতে দিন দিন বাড়ছে বস্তি এলাকা এবং মৌলিক চাহিদা হতে বঞ্চিত মানুষ। এ ছাড়াও বস্তি এলাকাগুলোতে দিন দিন বাড়ছে বেআইনি কাজ ও অপকর্ম, যা হতে পারে একটি বড় ধরনের সামাজিক সমস্যা।
তাই নদীপার, রেললাইন ও অন্য জায়গাগুলোতে বস্তি নিরসনে সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। সঠিক পরিকল্পনা, সামাজিক সহিষ্ণুতা, মানবাধিকার নিশ্চিত করা, সব সম্প্রদায়ের মানুষকে সমান সম্মান ও সহানুভূতি দেখানো, পুনর্বাসনে সরকারি ও বেসরকারি পদক্ষেপ নিশ্চিত করা, বস্তিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা, সঠিক বাস্তুসংস্থান, সমাজের সব জায়গায় সমানভাবে উন্নতি করার লক্ষ্যে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া, বস্তিবাসীদের আর্থিক সামর্থ্য বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া, গণশিক্ষা ও সব শিশু যাতে ছোট থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে, সে জন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা, বস্তিবাসী যাতে সঠিক চিকিৎসাসেবা পায়, তা নিশ্চিত করা এবং সরকারি মেডিকেলগুলোতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করাসহ বস্তিবাসীদের মধ্যে যাতে কোনো ধরনের আইনবিরোধী কাজ না হয়ম সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরাী বাহিনীদের সর্বদা সোচ্চার থেকে বস্তি নিরসনে এবং বস্তির উন্নয়নে সব ধরনের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
মো. মিনহাজুর রহমান মাহিম
শিক্ষার্থী
বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া