সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জিআই পণ্য উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
জিআই পণ্য উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে বাংলাদেশের আরও চার পণ্য অনুমোদন পেয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে অনুমোদিত জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮টি। শিল্প মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। ২০০৩ সালে বাংলাদেশে এ কাজের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে একে পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) নামে অভিহিত করা হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের ফলে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩ পাস হয়। এর দুই বছর পর ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বিধিমালা, ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়। ২০১৬ সালে জামদানি শাড়িকে বাংলাদেশে প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর স্বীকৃতি পায় আরও ২০টি পণ্য। সেগুলো হলো- বাংলাদেশের ইলিশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম, বিজয়পুরের সাদা মাটি, দিনাজপুরের কাটারিভোগ, বাংলাদেশ কালিজিরা, রংপুরের শতরঞ্জি, রাজশাহীর সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি, বাংলাদেশের শীতল পাটি, বগুড়ার দই, শেরপুরের তুলশীমালা ধান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আম, নাটোরের কাঁচাগোলস্না, বাংলাদেশের বস্ন্যাক বেঙ্গল ছাগল, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিলস্নার রসমালাই এবং কুষ্টিয়ার তিলের খাজা।

সম্প্রতি অনুমোদিত তিনটি পণ্য টাঙ্গাইল শাড়ি, নরসিংদীর অমৃতসাগর কলা ও গোপালগঞ্জের রসগোলস্নার অনুমোদনের কপি এবং জার্নাল গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।

চারটি জিআই পণ্যের জার্নাল প্রকাশিত হওয়ায় মোট অনুমোদিত জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮টি। এ ছাড়া আরও দুটি পণ্য জিআই পণ্য হিসেবে অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেগুলো হলো- জামালপুরের নকশিকাঁথা এবং যশোরের খেজুর গুড়। আগামী সপ্তাহে এই দুটি পণ্যের জার্নাল প্রকাশিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সম্প্রতি টাঙ্গাইলের শাড়ি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। টাঙ্গাইলের শাড়ি দক্ষ কারিগররা তাদের বংশপরম্পরায় তৈরি করছেন এই শাড়ি। ব্রিটিশ আমল থেকেই এই শাড়ি বুননের ইতিহাস। সুতরাং, ভারতের অযৌক্তি টেকেনি।

দিন যত যাচ্ছে, বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ছে জিআই পণ্যের স্বত্বের গুরুত্ব। বিশ্বব্যাপী নিজস্বতা ব্যাপারটি অনেক আকাঙ্ক্ষিত। তাই বিশ্বব্যাপী জিআই পণ্যের চাহিদা অনেক। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় জিআই পণ্য এগিয়ে থাকে। এর দাম ২০ শতাংশ কখনো বা এরও বেশি হয় এবং জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার পর পণ্যগুলো রপ্তানি বাজার বেড়ে যায়। তাই ভবিষ্যতে আমাদের দেশীয় পণ্যগুলোর জিআই স্বীকৃতির ব্যাপারটি নিয়ে আরও গভীরভাবে ভাবতে হবে। যেহেতু, জিআই স্বত্ব প্রাপ্তি একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হয়, তাই যেসব সংস্থা কিংবা ব্যক্তির ওপর দায়িত্ব থাকবে, তাদের আরও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে। সেই সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় যেন আবেদন বিলম্বিত বা বিঘ্নিত না হয়, সেদিকেও নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে খেয়াল রাখতে হবে। তবেই আমাদের দেশজ উৎপাদিত পণ্যকে আমরা বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড় করাতে পারব। এ ব্যাপারে সরকারের নজরদারি বাড়ানো জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে