কাটেনি ডলার সংকট

সঠিক উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের চলমান ডলার সংকট মোকাবিলায় সৌদি আরবের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি সৌদি আরব সফরের সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এ সহায়তা চেয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। সৌদি সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা সৌদি আরব থেকে আমদানি করা জ্বালানির মূল্য পরিশোধে ৪৫ দিন সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে আমরা তাদের বলেছি, আমাদের যদি এক বছর সময় দেওয়া হয়, তাহলে ভালো হয়। তারা বলেছে, তারা সেটি বিবেচনা করবে। তিন দিনের সৌদি আরব সফর শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে টাকার মান একেবারে কমে গিয়েছিল। তখন প্রতি ডলারের মূল্য ১১৭ টাকায় উঠেছিল। বর্তমানে অবশ্য খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ডলার সংকটের সুযোগ নিয়ে ২০১২ সাল থেকে ব্যাংকগুলোতে একটি সিন্ডিকেট সক্রিয় আছে। একাধিকবার জরিমানা ও চাকরিচু্যতিই শুধু করেনি, ব্যাংকগুলোর ডলার থেকে অতিরিক্ত মুনাফার অর্ধেক বাজেয়াপ্তও করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু এতেও হুঁশ ফিরছে না অনেক ব্যাংকের। তথ্যমতে, ২০২২ সালে ডলার কারসাজি চক্রের সঙ্গে ১২টি বাণিজ্যিক ব্যাংকও জড়িয়ে পড়েছিল। আগেই ওই ব্যাংকগুলোর ট্রেজারি হেডদের সরিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১২টি ব্যাংক ডলারের দর কারসাজি করে অনৈতিকভাবে এক হাজার ৩৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। নানা সময়ে দেশের বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নানা কারণে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণয় হয়- যা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগের। কেননা, কখনো ঋণ দিতে অনিয়ম, আবার কখনো নগদ টাকার সংকট। গত দুই বছর ধরে ডলার কারসাজিতে জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হচ্ছে ব্যাংকগুলো। এমনকি জরিমানা করে ও ট্রেজারি প্রধানদের সরিয়েও থামানো যাচ্ছে না ডলার কারসাজি। ফলে পরিস্থিতি কতটা উৎকণ্ঠার তা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। জানা যাচ্ছে, সৃষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। বারবার সতর্ক করার পরও বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডে বিব্রত বাংলাদেশ ব্যাংক- তখন এটি এড়ানো যাবে না। লক্ষণীয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র বলছে, তারা ব্যাংকগুলোকে নজরদারিতে রেখেছে। কিন্তু প্রতিদিনের হিসাব আসতে একটু দেরি হয়। আর এ সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছে তারা। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আমরা মনে করি, যখন ডলার নিয়ে নানামুখী সংকট ও নানা ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখন আবার ডলার কারসাজিতে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ব্যাংক- এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, কাটাতে হবে ডলার সংকট।