সিঁধ কেটে ধর্ষণ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি

প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যদি ধর্ষণসহ নানাভাবে নির্যাতনের মতো ঘৃণ্য ও ভয়ংকর অপরাধমূলক ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকে, তবে এর ভয়াবহতা কী রূপ- তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তিনজনের বিরুদ্ধে। তথ্য মতে, সোমবার রাত ২টায় ইউনিয়নের চরকাজী মোখলেছ গ্রামের একটি নতুন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী তিন সন্তানের জননী ও নির্যাতিত শিশু স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ধর্ষকরা ঘর থেকে সোনার গহনা ও ১৭ হাজার ২২৫ টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলেও জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল। এর এ ঘটনার প্রধান আসামি এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা- কতটা নির্মম, পৈশাচিক এবং বর্বরতাকে প্রকাশ করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত করাসহ সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত এক নারীকে জঙ্গলে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে সুবর্ণচর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়টি জানা গেল। ফলে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহতাকে স্পষ্ট করে তা অনুধাবন করা জরুরি। এটাও বলা দরকার, নোয়াখালীর এই সুবর্ণচরেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে একজন গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে উঠেছিল। আর এই মামলায় ১০ অভিযুক্তকে মৃতু্য দন্ডও দিয়েছেন আদালত। অন্য ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আমরা বলতে চাই, পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার চিত্র পরিলক্ষিত হয়। সঙ্গত কারণেই যখন একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, ঘটছে নারী নির্যাতনসহ হত্যাকান্ডের ঘটনাও, তখন এবারের ঘটনাটি আমলে নেওয়ার পাশাপাশি, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এ কথা মনে রাখা দরকার, ধর্ষণের মতো ঘটনা- ঘৃণ্য মানসিকতা এবং নৈতিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। এর পাশাপাশি নানা ধরনের নির্যাতনসহ যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত, তা কতটা ভয়ানক সেটাও বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে এরকম ঘৃণ্য ও ভয়ংকর অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে এমন ভয়ানক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা জারি রাখার বিকল্প নেই। আমলে নেওয়া দরকার, সমাজের সব শ্রেণির নারীই নির্যাতন, ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন- যেন কোথাও নারীরা নিরাপদ নয়। আর নারীরা কেবল যে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তা নয়, এরপর এমনও জানা গেছে, ধর্ষণের পর খুন করার ঘটনাও ঘটেছে। শিশুরা পর্যন্ত বাদ যাচ্ছে না এমন ঘৃণ্য থাবা থেকে। ফলে মানুষ কতটা বর্বর হলে এমন ঘৃণ্য ও ভয়ানক কর্মকান্ড ঘটায় তা ভাবনার অবকাশ রাখে। তাই যে কোনো মূল্যে সামাজিক অবক্ষয়ের এই চূড়ান্ত পরিস্থিতি রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দেশে যেভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে তা আমলে নিতে হবে। একের পর এক নির্যাতনসহ ধর্ষণের মতো পৈশাচিক ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে ধর্ষণ, নির্যাতনসহ ঘৃণ্য ও ভয়ংকর ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।