বিক্ষোভে উত্তাল জাবি ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক
প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
যদি ধর্ষণসহ নানাভাবে নির্যাতনের মতো ঘৃণ্য ও ভয়ংকর অপরাধমূলক ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকে, তবে এর ভয়াবহতা কী রূপ- তা আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত এক নারীকে জঙ্গলে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে। আর স্বাভাবিকভাবেই এ ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাস। ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৬ জনের সনদ স্থগিত করে বিষয়টি তদন্তের জন্য ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। পাশাপাশি তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ৯(৩) ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।
লক্ষণীয়, এমন ঘটনা কতটা নির্মম, পৈশাচিক এবং বর্বরতাকে প্রকাশ করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে এটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত করাসহ সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা। উলেস্নখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের দ্রম্নত শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে রোববার দিনভর বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া অপরিহার্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এমন ঘটনা ঘটলে তার ভয়াবহতা কীরূপ হতে পারে এবং কতটা আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে!
আমরা বলতে চাই, পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার চিত্র সামনে আসে। ফলে যখন একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, ঘটছে নারী নির্যাতনসহ হত্যাকান্ডের ঘটনাও, তখন এবারের ঘটনাটি আমলে নেওয়ার পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অন্যদিকে, বিশ্ব্যবিদ্যলয়ের অভ্যন্তরে এমন ঘটনা কতটা ভয়াবহত তা অনুধাবন করতে হবে। এবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক। একইসঙ্গে এ কথা মনে রাখা দরকার, ধর্ষণের মতো ঘটনা- ঘৃণ্য মানসিকতা এবং নৈতিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। এর পাশাপাশি নানা ধরনের নির্যাতনসহ যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত তা কতটা ভয়ানক সেটাও বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই এরকম ঘৃণ্য ও ভয়ংকর অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে এমন ভয়ানক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা জারি রাখার বিকল্প নেই।
প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্টদের আমলে নেওয়া দরকার, সমাজের সব শ্রেণির নারীই নির্যাতন, ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন- যেন কোথাও নারীরা নিরাপদ নয়। আর নারীরা কেবল যে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তা নয়, এর আগে জানা গেছে, ধর্ষণের পর খুনও করার ঘটনা ঘটেছে। শিশুরা পর্যন্ত বাদ যাচ্ছে না এমন ঘৃণ্য থাবা থেকে। ফলে মানুষ কতটা বর্বর হলে এমন ঘৃণ্য ও ভয়ানক কর্মকান্ড ঘটায় তা ভাবনার অবকাশ রাখে। সঙ্গত কারণেই যে কোনো মূল্যে সামাজিক অবক্ষয়ের এই চূড়ান্ত পরিস্থিতি রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত এক নারীকে জঙ্গলে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া দেশে যেভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে সেগুলো আমলে নিতে হবে। একের পর এক নির্যাতনসহ ধর্ষণের মতো পৈশাচিক ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে ধর্ষণ, নির্যাতনসহ ঘৃণ্য ও ভয়ংকর ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে।