শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বাস্থ্য খাত

আস্থা তৈরিতে উদ্যোগ নিন
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
স্বাস্থ্য খাত

বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, দেশের জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। যদি নানা ধরনের সংকট থাকে, এমনকি হাসপাতাল ক্লিনিকের মতো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান অবৈধ হয় বা অনিয়ম থাকে তবে তা সন্দেহাতীতভাবেই উদ্বেগজনক। যা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, স্বাস্থ্য খাতে আস্থা নেই বলেই মানুষ বিদেশে চলে যাচ্ছে এমন মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, এই আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। ফিরিয়ে আনতে গ্রাসরুট লেভেলে কাজ শুরু করার বিষয়টিও জানিয়েছেন। মূলত, রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য খাতে আস্থা নেই বলেই মানুষ বিদেশে চলে যাচ্ছে- এই বিষয়টি ভাবনার অবকাশ রাখে। যা সহজ ভেবে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং আস্থা যেন থাকে সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। উলেস্নখ্য, সরকারি হাসপাতালে সেবায় আস্থা না থাকায় রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে যান এবং বিদেশে যান- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেছেন, 'রাতারাতি কোনো কিছুর পরিবর্তন করা সম্ভব না। আস্থা নেই বলেই মানুষ (বিদেশে) চলে যাচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষ ভারত যাচ্ছে, ব্যাংকক যাচ্ছে। রংপুর থেকে মানুষ ঢাকায় আসছে, তার মানে আস্থার অভাব।

আমরা বলতে চাই, দেশের সার্বিক অগ্রগতি তখনই স্বার্থক হবে যখন দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন হবে। মানুষ সুচিকিৎসা পাবে। সচেতনতা বাড়বে। ফলে স্বাস্থ্য খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন জরুরি, জরুরি আস্থা ফেরানো। কেননা, মানুষ যদি সুচিকিৎসা সঠিকভাবে না পায় তবে তার চেয়ে পরিতাপের আর কী হতে পারে! চিকিৎসার জন্য অনেকে বিদেশ যাচ্ছে এটা যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়া কিংবা চিকিৎসা মিলছে না- এমন ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।

লক্ষণীয় যে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন- যে প্রকল্প এবং যে কার্যক্রম নিলে জনসাধারণের উপকার হবে সে ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করবেন। অপ্রয়োজনীয় কোনো প্রকল্প নিলাম বা কোন খাতে খরচ করলাম, সে ধরনের কোনো বরাদ্দ নেব না- যাতে সাধারণ মানুষের কাজে না লাগে- এমনটিও জানিয়েছেন। আমরা মনে করি, এটি অত্যন্ত ইতিবাচক, যার যথার্থ বাস্তবায়নেও কাজ করতে হবে। এছাড়া যারা অবৈধ ক্লিনিক চালাচ্ছেন তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী। আর তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন।

আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলো আমলে নেওয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। বলা দরকার, এর আগেও নানা ধরনের অনিয়ম আলোচনায় এসেছে। অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক থেকে শুরু করে, এমন বিষয়ও খবরে উঠে এসেছে যে, অনেকে পড়ালেখা না জেনেই চিকিৎসক সেজে চিকিৎসা দিয়েছেন। আমরা মনে করি, অবৈধ হাসপাতালসহ যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া জনসামর্থ্য বিবেচনায় রেখে ওষুধের দামের বিষয়টিও আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। বলা দরকার, সম্প্রতি এটাও আলোচনায় এসেছে যে- করোনার নতুন ধরনের বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী? এর জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুব দ্রম্নত ছড়ায়। কিন্তু এতে প্রাণহানির শঙ্কা কম। এই ভ্যারিয়েন্টের এগেনেস্টে যে ভ্যাকসিন আছে সেটা কার্যকরী এবং এটা দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি।

সর্বোপরি বলতে চাই, চিকিৎসা খাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হলে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়াসহ সব ধরনের অনিয়ম বন্ধ করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে আস্থা তৈরিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে