আমাদের মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম মৌলিক অধিকার হলো শিক্ষা। পূর্বে শিক্ষা ক্ষেত্রের যেমন অগ্রগতি ছিল, পরবর্তী সময় তার অবনতি হয়েছে দ্বিগুণ। আমাদের দেশের ছাত্রছাত্রীরা পরিপূর্ণ শিক্ষার দিকে অনেকটা পিছিয়ে আছে। সেটা হোক বিদ্যালয়, কলেজ, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের সীমার চেয়ে সোনার সময় মানবকালে আর হতেই পারে না। সেই সুবর্ণ রঙিনকালে নেমে এসেছে মেঘের ঘনঘটা হয়ে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক, কারিগরি কিংবা গৃহস্থালির কাজে বাচ্চাদের আজকাল লিপ্ত করা হয়। একজন অভিভাবক বলেছেন, 'পাঠের সঙ্গে সংস্কৃতি শেখা যায়, তবে সংস্কৃতির সঙ্গে পাঠ নয়।' আমাদের দেশের সংস্কৃতি পুরো পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার জন্য পাঠ্যক্রমে এমন ব্যাপক পরিবর্তন বোধগম্য বলে মনে করছে না সাধারণ জনতা।
উপরন্তু দেখা যায়, বিভিন্ন সরকারি বা সিটি করপোরেশন স্কুলের শিক্ষকদের রয়েছে শিক্ষাদানে চরম অবহেলা। অনেক ক্ষেত্রে এমনও হয়, শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলেও ক্লাসে তার অনুপস্থিতি চোখে পরার মতো। সিলেবাস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষার সময়সূচি, তবে সিলেবাস শেষ করার নামগন্ধও নেই। উপায় না পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা ঝুঁকে পড়ছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার কিংবা প্রাইভেট স্যারের প্রতি। পড়াশোনার নামে অভিভাবকদের থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। অধিকাংশ অভিভাবক এখন ভালো মানের পড়ার জন্য ঝুঁকে পড়েছেন প্রাইভেট বিদ্যালয়গুলোর দিকে। আমাদের দেশের সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিবছর ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষকদের পাঠ্যক্রম নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবু কেন শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে না?
সাম্প্রতিক কালে শিক্ষা বিভাগে কিছুটা বিবর্তন এসেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও শিক্ষার মান বাড়ানোর কথা বলছে। কিন্তু এসব তৎপরতা লোক দেখানো না আন্তরিক, তা কাজেই প্রমাণ পাওয়া যাবে। আশা করা যায়, আমাদের সরকার, সাধারণ জনতা শিক্ষার মান উন্নয়নে আরও বেশি জোর দিবে এবং বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।