শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

ডিমের দামে কারসাজি কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

  ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ডিমের দামে কারসাজি কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

যোগসাজশের মাধ্যমে বাজারে অস্বাভাবিকভাবে ডিমের দাম বাড়ানোর অপরাধে ডায়মন্ড এগকে আড়াই কোটি টাকা এবং সিপি বাংলাদেশকে এক কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। ২২ জানুয়ারি (সোমবার) বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের দুটি মামলার রায় দেওয়া হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি বুধবার বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, যোগসাজশের মাধ্যমে বাজারে অস্বাভাবিকভাবে ডিমের দাম বাড়ানোর অপরা?ধ প্রমাণ হওয়ায় প্রতিযোগিতা আইন-২০১২ এর ধারা ১৫ লঙ্ঘনের অপরাধে ডায়মন্ড এগকে আড়াই কোটি এবং সিপি বাংলাদেশকে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো পণ্য বা সেবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ, গুদামজাতকরণ বা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত এমন কোনো চুক্তিতে বা ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, আবদ্ধ হইতে পারিবে না, যাহা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে বা বিস্তারের কারণ ঘটায়, কিংবা বাজারে মনোপলি অথবা ওলিগোপলি অবস্থার সৃষ্টি করে।

'১৫ দিনে ডিম ও মুরগির বাজার থেকে ৫১৮ কোটি টাকা লুট' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও বিভিন্ন পত্রিকা এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা কমিশনের নবম সভায় এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। তদন্ত প্রতিবেদন ও আইনজীবীদের লিখিত ও মৌখিক যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা কমিশন উভয় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার আদেশ দেয় বলে রায়ের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে।

এটা সত্য, বাজার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি দেশের মানুষ। নিত্যপণ্যসহ পরিবহণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রায় সব ধরনের সেবা খাতে চলছে সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে সবার আগে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। এর জন্য দরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার। তবে এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও জড়িত থাকায় তা কখনই ভাঙা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। মানুষের কল্যাণে কিছু করতে হলে এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। কারণ এরাই বাজারে কারসাজি করে।

বাজার করতে আসা ক্রেতার বক্তব্য হচ্ছে, বর্তমান সময়ে বাজারে এসে একদামে কোনো পণ্য পাওয়া অনেক কষ্টকর। বাজারে যেসব পণ্য আছে তার দাম সকালে এক রকম আবার বিকালে আরেক রকম। আবার এই বাজারে ৪০ টাকা হলে অন্য বাজার তা হয়তো ৪৫ অথবা ৩৫ টাকা। প্রায় সব পণ্যের ক্ষেত্রেই দোকান বা বাজার ভেদে তারতম্য রয়েছে। এ সব হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে ভালো কথা, সেই উন্নয়নের সুফল যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারে সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ জন্য দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ভাঙতে হবে বাজার সিন্ডিকেট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে