শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

অনলাইন প্রতারণা রোধে পদক্ষেপ নিন

  ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন প্রতারণা রোধে পদক্ষেপ নিন

প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার নজির নতুন নয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে এটা জানা গেছে যে, প্রতারকচক্র সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে- যা সামগ্রিকভাবেই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। উলেস্নখ্য যে, ঘরে বসেই আয় করুন মাসে লাখ লাখ টাকা- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন লোভনীয় বিজ্ঞাপন অহরহ চোখে পড়ে। যেগুলো আসলে প্রতারণার ফাঁদ। এভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ছয় সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে বলে খবরে উঠে এসেছে। তথ্য মতে, গত ২৩ জানুয়ারি রাতে পুলিশের এন্টি-টেরোরিজম ইউনিট ঢাকার উত্তরা-পূর্ব থানাধীন ৬ নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান চালায়। আর এ সময় গ্রেপ্তার হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘরে বসেই লাখ লাখ টাকা রোজগারের প্রলোভন দেখানো প্রতারক চক্রের ছয় সদস্য।

আমরা বলতে চাই, অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রতারক চক্র এবং তাদের কর্মকান্ড কতটা ভীতিপ্রদ তা আমলে নেওয়া জরুরি। এছাড়া মিথ্যা প্রলোভনসহ নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে মানুষকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে এমন আলোচনাও বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে- যা এড়ানো যাবে না। এবারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশের এন্টি-টেরোরিজম ইউনিটের মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গ্রেপ্তাররা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে টাকা রোজগারের প্রলোভন দেখাত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে পুঁজি করে চক্রটি এমন প্রতারণার ফাঁদ পাতে। এটাও আলোচনায় এসেছে, ফ্রিল্যান্সিং খুবই জনপ্রিয় একটি পেশা। নিজের সৃজনশীলতা বা সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে এ পেশায় বৈধভাবেই অনেক টাকা রোজগারের সুযোগ আছে। অনেকেই এভাবে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছেন। আর ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কোর্স করানোর প্রলোভন দেখিয়ে গ্রেপ্তাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করত। এমন বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই কোর্স করার জন্য টাকা দেন। এরপরই প্রতিষ্ঠানটি নানা টালবাহানা শুরু করে। এভাবে গ্রেপ্তাররা বহু মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফাঁদে পড়াদের কাছ থেকে বিভিন্ন সফটওয়্যার টুলস পস্নাগইন করার জন্য বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার ৫০০ টাকা নিত। টাকা দেওয়ার পর তারা ফ্রি টুলসগুলো সরবরাহ করত। সেসব টুলস দিয়ে কোনোভাবেই রোজগারের কোনো সুযোগই নেই। এভাবে ১৫৬টি ব্যাচের অন্তত এক হাজার মানুষকে প্রতারিত করেছে চক্রটি।

আমরা বলতে চাই, প্রতারক চক্রটি যেভাবে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, তার ভয়াবহতা অনুধাবন করতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া আমলে নেওয়া দরকার, বিভিন্ন সময়েই নানা ধরনের প্রতারক চক্রর বিষয় আলোচনায় এসেছে। যারা প্রতারণার অর্থ দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন এবং নানাভাবে মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায় করেন। ভয়ংকর বস্ন্যাকমেইলিং চক্র গড়ে তোলার বিষয়টিও এর আগে জানা গেছে। ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে বস্ন্যাকমেইলিং করা, চাকরির নামে অর্থ আদায়, ফাঁদে ফেলাসহ মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে ঠকানোর মতো নানা ধরনের অপতৎপরতার বিষয় সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে এই ধরনের ঘটনা আমলে নিতে হবে এবং যারা এই ধরনের অপতৎপরতার সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ছয় সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে- যা আমলে নিয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে এই ধরনের ঘটনা প্রথম নয়, এর আগেও নানা সময়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। মানুষের সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ আদায় করেছে অপরাধী চক্র। ফলে যারা স্বার্থ উদ্ধারে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিতে তৎপর তাদের লাগাম টেনে ধরতে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে