রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সাইবার অপরাধ সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে

  ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সাইবার অপরাধ সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে

সাইবার অপরাধ এমন একটি অপরাধ যা কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পর্কিত। সম্পর্কিত মোবাইল ফোনের সঙ্গেও। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য চুরি করে নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। কখনো কখনো চুরি করা তথ্য অর্থের বিনিময়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে তৃতীয় পক্ষের কাছেও। ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য চুরি ব্যক্তি পর্যায় থেকে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটারে ম্যালওয়্যারের আক্রমণ বেড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে সরকারের সাইবার নিরাপত্তাসংক্রান্ত প্রকল্প কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট)। সংস্থাটি বলছে, গত অক্টোবর থেকে পাঁচটি ম্যালওয়্যারের ৬ হাজার ৫২১টি আক্রমণ চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন না হলে যে কোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সাইবার আক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। নিকট অতীতে দেশ-বিদেশের একাধিক বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের অর্থ চুরিরও নজির আছে। বাংলাদেশে তথ্য চুরি সাধারণ একটা ঘটনা। সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানেই পাইরেসি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। পাইরেসি সফটওয়্যার ব্যবহারে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া বিভিন্ন ক্র্যাক ভার্সনের সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য চুরি হয়ে থাকে। সাইবার ক্রাইমটা হচ্ছে বর্ডারলেস। কোন দেশ থেকে অপরাধ হচ্ছে, সেটা খুঁজে বের করা কঠিন। হ্যাকিং হলো এমন একটা বিষয়, এটা হলে থানায় অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া দুরূহ। এ ধরনের অপরাধ তদন্ত করার জন্য পুলিশের যে ধরনের জনবল ও ল্যাবরেটরি থাকার দরকার ছিল, সেটা একেবারেই অপ্রতুল।

কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম বলছে, গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত রেড রাইন স্টেলারের আক্রমণের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৬৭, মেটা স্টেলারের ১ হাজার ৫৬৮, রাইজপ্রোর ৩৩৩, লুম্মাসিটুর ১৩৯ এবং রেকুনের ১১৪টি। তথ্য চুরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ম্যালওয়্যারগুলো সামগ্রিকভাবে ইনফো স্টিলার হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের ম্যালওয়্যার মোবাইল কিংবা কম্পিউটার ডিভাইস থেকে লগইনের তথ্য যেমন ব্যবহারকারীর নাম, আইডি, পাসওয়ার্ড ও অন্য সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে তা সাইবার অপরাধীদের কাছে পাঠায়। অপরাধীরা এসব তথ্য বড় ধরনের সাইবার আক্রমণের পরিকল্পনায় ব্যবহার করে। ব্যক্তি পর্যায়ে সংক্রমণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানও এই ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হতে পারে। সম্প্রতি এ ধরনের ম্যালওয়্যার সংক্রমণের মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে হইচই হলেও এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে কোনো শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা মনে করি, এটি উদ্বেগজনক ঘটনা। এ ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তৎপর হতে হবে। সাইবার অপরাধ দমনের বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে