দেশে ফের বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। বাংলাদেশে করোনার ওমিক্রন ধরনের উপধরন জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। পাঁচ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় জেএন.১ ধরা পড়েছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এ কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, 'পাঁচটি নমুনায় ওমিক্রনের উপধরন জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার পর এই উপধরন শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাস খানেক আগেই নতুন এই উপধরনের কথা বিশ্ববাসীকে জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, নতুন এই উপধরন অতি দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা আছে। তবে এতে রোগের লক্ষণে তীব্রতা কম। গত ১৪ জানুয়ারি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সরকার আড়াই কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহ নিশ্চিত করেছে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে চতুর্থ ডোজ হিসেবে এসব টিকা দেওয়া হবে। দ্রম্নত টিকা দিতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ১ম, ২য় এবং বুস্টার ডোজ (৩য়, ৪র্থ ডোজ) বিতরণ এবং প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে। নির্দেশনায় বলা হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা শহরের ৮টি কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ অর্থাৎ ৩য় এবং ৪র্থ ডোজ ফাইজার ভিসিভি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলো হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, স্যার সলিমুলস্নাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল। পরবর্তী ধাপে ঢাকার বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও সরকারি হাসপাতাল, ঢাকার বাইরের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন বিতরণের মাধ্যমে কোডিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
করোনার সংক্রমণ সারা বিশ্বকে কতটা বিপর্যস্ত করেছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া করোনার প্রভাবে দেশেও ভীতিপ্রদ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। প্রায় প্রত্যেকটি খাতে যেমন নেতিবাচক পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে তেমনি মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও বিঘ্নিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতিকে সাফল্যের সঙ্গেই মোকাবিলা করেছে। তারপর করোনা পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করে, প্রতিটি খাতে আবারও গতি ফিরতে শুরু করে। সম্প্রতি জেএন.১ নামে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেছে। বাংলাদেশেও জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। তাই দ্রম্নত করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নেরও বিকল্প নেই। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে মাস্ক পরার বিকল্প নেই।