গ্যাস সংকট কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
সারাদেশের শিল্পকারখানা ও বাসাবাড়িতে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। ২০২০ সালের এপ্রিলের পর এবারই দেশে গ্যাসের সরবরাহ সর্বনিম্ন। সেটি হলো প্রায় তিন হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে চলতি মাসে গড়ে সারাদেশে দুই হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। এই সরবরাহ ২০২১ সালের শেষ ছয় মাসের গড় সরবরাহ থেকেও কম, যখন ডলারের অভাবে স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বন্ধ ছিল। এলএনজির দামও তখন ছিল আকাশছোঁয়া। গত অক্টোবর থেকে শীত শুরু হওয়ায় সারাদেশে বিদু্যতের চাহিদা কমেছে। পাশাপাশি বিদু্যৎ খাতে কমেছে গ্যাসের চাহিদাও। তবে তার মানে এই নয় যে, বিদু্যৎ খাতের বেঁচে যাওয়া গ্যাস অন্য খাতগুলো বেশি পাচ্ছে। পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, এই গ্যাস সংকটের পেছনে দেশীয় উৎপাদন কমে যাওয়া একটা কারণ। পাশাপাশি এলএনজি আমদানির পরিমাণও কমেছে। খুব নিকট ভবিষ্যতে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথও দেখতে পাচ্ছেন না তারা। তারা বলছেন, আগামী ফেব্রম্নয়ারিতে গ্যাস সরবরাহের উন্নতি হবে। তবে তখন গ্যাসের চাহিদা আরও বাড়বে।
ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে আগামী তিন বছরের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদু্যৎ সরবরাহের একটি খসড়া পরিকল্পনা হাজির করেছেন টানা তৃতীয় মেয়াদে বিদু্যৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ মুহূর্তে যে গ্যাস সংকট চলছে, আগামী মার্চে রোজা শুরুর আগেই তা লাঘব হবে বলে আশা দেখিয়েছেন তিনি। নতুন করে পুরনো দপ্তরের দায়িত্ব পাওয়ার পর মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিদু্যৎ ও জ্বালানি খাতের অগ্রগতি, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রতিমন্ত্রী। আমরা তার কথায় আশ্বস্ত হতে চাই।
এটা সত্য, রাজধানীর অনেক এলাকায় প্রতি শীতেই গ্যাসের চাপ কম থাকে। এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ। এক সপ্তাহ ধরে ঢাকার অনেক আবাসিক এলাকায় দিনের অধিকাংশ সময় গ্যাস থাকছে না। গ্যাস না থাকার কারণে ঢাকার আশপাশের শিল্পাঞ্চলের জেনারেটর, বয়লার অচল রয়েছে, ফলে উৎপাদনও বন্ধ রাখার কথা জানাচ্ছেন শিল্প মালিকরা। সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ার কারণে গ্যাসের জন্য অপেক্ষামান গাড়ির প্রতীক্ষার সময়ও দীর্ঘতর হচ্ছে। গ্যাস সংকটে অনেক শিল্পকারখানার উৎপাদন কমেছে তিন ভাগের এক ভাগে। গ্যাস সংকটের কারণে অনেকের জ্বালানি চাহিদার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ডিজেল ব্যবহার করতে হয়, যাতে উৎপাদন খরচ বাড়ানো যায়।
মনে রাখতে হবে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ার কারণে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। অনেকের বাসায়ই রান্না হচ্ছে না। ফলে বাইরে থেকে খাবার কিনে আনতে হচ্ছে। এই সংকট দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।