জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা, যিনি একজন জননন্দিত নেতা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। নিজ নেতৃত্বের গুণাবলি দিয়ে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চমবারের মতো এবং একটানা চতুর্থবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজেকেই বিশ্ব-ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেন। দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার কারণেই বিভিন্ন উন্নয়নে বদলে গেছে দেশের চিত্র।
আর এবারের এই ঐতিহাসিক বিজয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার জায়গাটা বেড়েছে অনেকটা বেশি। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। তরুণদের চাওয়া-পাওয়া রয়েছে বহুগুণ। তরুণরা জাতির ভবিষ্যত, প্রতিটা কাজে তরুণদের অবদান অনস্বীকার্য। ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন এদেশের তরুণ সমাজ। দেশের জন্য জীবন বাজি রাখা এই তরুণরা এনে দিয়েছিলেন লাল-সবুজের পতাকা। নতুন প্রজন্ম আগামী দিনের উজ্জ্বল নক্ষত্র, তাদের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে আগামীর বাংলাদেশ। সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা এগিয়ে গেছে অনেকটা তরুণ সমাজ।
তবে, এই তরুণদের নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে দক্ষ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যা আছে, তা যথেষ্ট নয়। দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মতো। শিক্ষার হার বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু বেকারত্ব খুব একটা কমছে না। অনেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও চাকরি পাচ্ছে না। অনেক সেক্টরে গিয়ে যখন চাকরি মেলে না, তখনি হতাশায় ভোগেন তরুণ সমাজ। অনেকে আবার কোনো পথ না পেয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। বেকারত্বের কারণেই তরুণ সমাজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ‘শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২’ এ তথ্য মতে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ১৬ লাখ ৯০ হাজার এবং নারী ৯ লাখ ৪০ হাজার। জরিপে বলা হয়, ২০১৭ সালে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ। সর্বশেষ জরিপ হিসেবে বেকার কমেছে ৭০ হাজার। শুধু তাই নয়, ছয় বছর আগের তুলনায় বেকারত্বের হারও কমেছে। বর্তমানে বেকারত্ব হার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছেÑ যা ২০১৭ সালে ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। বেকারত্ব কিছুটা কমেছে তার কারণ সরকার বিভিন্ন দক্ষতা ও উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিচ্ছে যুবকদের। তবে, সেই ক্ষেত্রে তুলনামূলক অনেক কম। কারণ এখনো প্রতিটা উপজেলা পর্যায়ে সরকারে পক্ষে থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দেওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ হয়ে উঠেনি। জেলা ভিত্তিক যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থাকলেও তুলনামূলক সীমিত পরিমাণ আসন থাকার কারণে অনেকে সুযোগ পায় না।
তরুণদের একটা বড় অংশ গ্রামে থাকে। প্রত্যন্ত এলাকায় ছেলে-মেয়েদের জেলা শহরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া অনেক কারণে হয়ে ওঠে না। কেবল নগরের তরুণদের উন্নয়ন নয়, গ্রামীণ ও প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণদের উন্নয়নের কথাও ভাবতে হবে।
ইমরান হোসাইন : কলাম লেখক