রিজার্ভ কমেছে
প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন
প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
আবারও রিজার্ভ কমে আসার বিষয়টি জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বলা দরকার, এর আগেও এটা আলোচনায় এসেছিল যে, ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে এখন যখন রিজার্ভ কমার বিষয়টি সামনে এলো তখন তা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক। যা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা।
সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় ১২৭ কোটি ডলার বা এক দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা কমে ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। তথ্য মতে, মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, আকুর দায় পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার- যা আন্তর্জাতিক মানদন্ড বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি মতে (বিপিএম৬ অনুযায়ী) দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২০ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ অনুয়ায়ী রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
আমরা মনে করি, রিজার্ভ সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। একইসঙ্গে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এছাড়া এটাও বলা দরকার, এর আগে যেমন রিজার্ভ কমার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে, তেমনি অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে বাড়ছে উদ্বেগ- এমন বিষয়ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছিল। ফলে রিজার্ভ কমার বিষয়টিকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। উলেস্নখ্য, দেশের ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে। তবে ২০১৭ সালে রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল। আর বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামায় ছিল। তবে করোনাপরবর্তী সময়ে বিশ্ববাজারে সুদহার অনেক কমে আসে। এতে অনেক দেশ বিদেশি ঋণ কমালেও বাংলাদেশে বেড়ে যায়। এ কারণে আগের ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাড়তি চাপ তৈরি হয়।
আমরা মনে করি, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। এছাড়া এটাও আমলে নেওয়া দরকার, একদিকে যেমন করোনা পরবর্তী সময়ে ঋণ বেড়ে যায়, তেমনি দেশের মধ্যে তীব্র ডলার সংকটে খোলাবাজার পরিস্থিতি ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে সংকট আরও জটিল হয়। বাধাগ্রস্ত হয় এলসি খোলা। জানা যাচ্ছে, বাজার পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ করে জরুরি পণ্য আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে প্রতি মাসে বাজারে ডলার চলে যাওয়ায় কমছে রিজার্ভের পরিমাণ। লক্ষণীয়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশে পণ্য আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫৭২ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের। একই সময় দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি ডলার মূল্যের। এতে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে ৪৭৬ কোটি ডলার।
আমরা বলতে চাই, এর আগে এটা সামনে এসেছিল যে, রিজার্ভ ধরে রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও ঘাটতি কমছে না। অন্যদিকে, রিজার্ভ কমে যাওয়াটা অর্থনীতির জন্য ভালো খবর না এটাও বারবার আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি, সর্বাত্মক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সেই মোতাবেক উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রিজার্ভ কমছে এই বিষয়টিকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। রিজার্ভ সংক্রান্ত পরিস্থিতি আমলে নেওয়া এবং অর্থনীতিবিদরা যে বিষয়গুলো বলছেন, সেগুলোকে বিবেচনায় রেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রিজার্ভ সংক্রান্ত যে বিষয় সামনে আসছে তা বিবেচনায় নেওয়ার পাশাপাশি করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ ও এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।