\হ
বিভিন্ন ধরনের অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়; তেমনি কারসাজিসহ নানা কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয় বারবার আলোচনায় আসে। অথচ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। সারাদেশের প্রায় সবখানে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রভাব পড়েছে। আর এর বড় প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। খবরে উঠে এসেছে যে, নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতার আশঙ্কা করছেন অনেকে। ফলে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ক্রয় করতে বাজারে ভিড় করছেন। এতে হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় বাজারে সবজিসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে।
তথ্য মতে, সোমবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সবজির বাজারে শীতের শুরুতে ৩০ টাকা বিক্রি হওয়া প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এভাবে বিভিন্ন পণ্যে দাম বেড়েছে। সবজির মতো ডিম ও মাংসের বাজারেও দাম বৃদ্ধির বিষয়টি উঠে এসেছে। এছাড়া রুই, কাতল ও পাঙ্গাসসহ প্রায় সব ধরনের মাছের দামও বেড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, ব্যবসায়ীরা বলছেন- শীতের শুরুতে সবজির দাম কম থাকলেও তফসিল ঘোষণার পর থেকে তা বাড়তে থাকে। তবে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচির কারণে তা আরও বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাজারে একটা প্রভাব পড়েছে।
আমরা বলতে চাই, নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। স্মর্তব্য যে, নানা সময়েই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং নানা ধরনের অভিযোগও সামনে আসে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সেই মোতাবেক উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। এটাও বলা দরকার, নির্বাচনের আগে ঘোষিত ইশতেহারে বাজারমূল্য ও আয়ের মধ্যে সঙ্গতি প্রতিষ্ঠা করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে এখন যখন বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সামনে আসছে, তখন তা আমলে নিয়ে গ্রহণযোগ্য এবং কার্যকরী পদক্ষেপও নিতে হবে।
স্মর্তব্য যে, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নিত্যপেণ্যর দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগও উঠেছিল যে, সরকার কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও সেই দামে কোথাও পণ্য পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। অথচ এটা আমলে নেওয়া সমীচীন, নিত্যপণ্যের দাম যদি চড়া হয়, তবে তা কতটা উদ্বেগের! মনে রাখা দরকার, এর আগে ক্রেতার চাপের সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট দেখিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগও নতুন নয়। ফলে বিভিন্ন অজুহাতকে সামনে রেখে কোনো সিন্ডিকেট বা অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, যখন প্রয়োজনীয় দ্রব্যর দাম বৃদ্ধি পায়, তখন জনসাধারণের ওপর তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ফলে সার্বিক চিত্র আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় তৎপরতা বজায় রাখা এবং নিতপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। বিশেষ করে অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন মানুষকে জিম্মি করতে না পারে সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে। কৃত্রিম সংকটসহ যে কোনো কারণেই কেউ যেন ইচ্ছেমতো দাম বাড়াতে না পারে, সেই লক্ষ্যে মনিটরিং অত্যন্ত জরুরি। এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর দায় চাপানো কিংবা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ কিংবা চাহিদা বেশি বলে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে এমনটিও কাম্য নয়।
আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; একইসঙ্গে নিতপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।