পাঠক মত

বিপথগামী হচ্ছে পথশিশু

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

শামীম আহমেদ শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজ
মানুষ সামাজিক জীব। মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখে পরিবার। কেননা সামাজিকীকরণের মাধ্যমে পরিবারে শিশু জন্ম থেকে বেড়ে ওঠে এবং সমাজের নিয়ম-কানুন ও ভালো-মন্দ শেখে। কিন্তু দেশে অনেক শিশু আছে যাদের না আছে পরিবার না আছে থাকার নির্দিষ্ট জায়গা। বিভিন্ন কারণে পারিবারিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে শিশু বেড়ে উঠছে অনাদর-অবহেলায়। সঠিক যত্ন নেওয়ার কেউ না থাকায় তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। রাত হলে তাদের দেখা যায় বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালে। দেখা যায় ফুটপাথ ও পার্কসহ খোলা জায়গাগুলোতেও। তাদের যাপিত জীবনের চিত্র প্রতিনিয়ত ইঙ্গিত করে এরা সমাজের 'অবাঞ্ছিত' নাগরিক। এদের না আছে পরিবার, না পায় রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা। জীবন-জীবিকার তাগিদে অর্থ উপার্জনের জন্য টোকাইয়ের কাজ করলেও বিভিন্ন কারণে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। যেহেতু পথশিশুরা একসঙ্গে প্রায় সময় থাকে এবং রাত্রিযাপন করে। কেউ একজন বিপথে চলে গেলে তার প্ররোচনায় বাকি সবাই বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। পথশিশুদের অধিকাংশই মাদকাসক্ত। প্রথমে শুরু ড্যান্ডি দিয়ে, এরপর হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবাসহ নেশার ইনজেকশনে আসক্ত হয়ে পড়ে। নেশার টাকার জন্য চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ইত্যাদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত ছিনতাই হচ্ছে কারও মোবাইল, হাত থেকে ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে যাওয়া, পরিহিত স্বর্ণের অলংকার ছিনতাই করতে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। ইদানীং দূরপালস্নার বাস রাজধানীতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের ফোন ছিনতাই এবং চালকের কাছে চাঁদা আদায় করছে। মালবাহী গাড়ি থেকে পণ্য নামিয়ে নেওয়া ঘটনা অহরহ দেখা যায়। তাছাড়াও তারা মাদকের ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমান সময়ের আতঙ্ক কিশোর গ্যাংয়ের বড় একটি অংশ পথশিশু। একদিকে যেমন বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে বিপথগামী হচ্ছে তেমনি শিক্ষার সুযোগ না থাকায় সুন্দর ভবিষ্যৎ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের উচিত পথশিশুদের সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে পুনর্বাসনসহ যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা। কেননা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তাদেরও মানুষের মতো মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তারা রাষ্ট্রের কোনো অবাঞ্ছিত নাগরিক নয়।