প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে উসমানী সাম্রাজ্য ভেঙে পড়লে ফিলিস্তিন ব্রিটিশ ম্যান্ডেটরি শাসনের অধীনে আসে। ১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ব্রিটেন ফিলিস্তিনে ইহুদিদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের প্রতি সমর্থন জানায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ইহুদিদের আরেক দফা অভিবাসন ঘটে। ক্রমেই আরব ও ইহুদিদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে থাকে। উভয়পক্ষের উত্তেজনা ও সহিংসতার মাঝে ব্রিটেন বাধ্য হয় ফিলিস্তিন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে। ফিলিস্তিন থেকে ব্রিটেনের অপসারিত হওয়ার পর জাতিসংঘের অধীনে ফিলিস্তিনকে পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়। ১৯৪৭-এর নভেম্বরে, জাতিসংঘ বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে ফিলিস্তিনকে বিভক্ত করে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। ফিলিস্তিনের মোট ভূমির ৫৬.৫% নিয়ে ইহুদি-ইসরাইল রাষ্ট্র ও ৪৩.৫% ভূমি নিয়ে আরব-ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য বিভক্ত করে দেওয়া হয়। তিন ধর্মের কাছে পবিত্র জেরুসালেম নগরী জাতিসংঘের অধীন আন্তর্জাতিক জোন হিসেবে রাখার কথা প্রস্তাবে বিবৃত করা হয়। ইহুদিরা জাতিসংঘের প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। কিন্তু অপরদিকে, আরবরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই শুরু হয় আরব-ইসরাইল সংকট। একে একে সংঘটিত হয় চারটি আরব ইসরাইল যুদ্ধ।
১৮৯৭ সালে সুইজারল্যান্ডে প্রথম জায়নবাদী কংগ্রেসের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ঠিক হয়, ইহুদিদের পবিত্রভূমি গড়ে তোলা হবে ফিলিস্তিনে। ফিলিস্তিনই তাদের পূর্বভূমি বলে দাবি করে তারা। একদিন ফিলিস্তিনে তাদের দেশ গঠিত হবে এই আশায়, সেই সময় থেকেই ধীরে ধীরে ইহুদিরা অটোমান- ফিলিস্তিনে পাড়ি দিতে শুরু করেছিল। ফিলিস্তিনকে বলা হয় ধর্মের আঁতুড়ঘর। ইহুদি, খ্রিস্টান, মুসলিম- এই তিন ধর্মের মানুষই এই জায়গাকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করেন। ষোড়শ শতাব্দী থেকে ফিলিস্তিনের দখল ছিল অটোমান শাসকদের হাতে। অটোমান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল এই পবিত্র ভূমি। তিন ধর্মের মানুষেরই মোটামুটি শান্তিপূর্ণ অবস্থান ছিল। কিন্তু, ইউরোপে দীর্ঘ সময় ধরেই বিভিন্ন কারণে ইহুদি সম্প্রদায়ের ওপর বিভিন্ন জোর জুলুম চলত। আঠারো শতক থেকে ধীরে ধীরে ইহুদিদের এক আন্দোলন গড়ে ওঠে। যার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ইহুদিদের একজোট করা এবং ইহুদিদের জন্য একটি পৃথক দেশ স্থাপন- যা পরবর্তী সময়ে 'জায়নবাদ' হিসেবে পরিচিত হয়। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। অটোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে ব্রিটিশ এবং ফরাসিরা। অটোমান সাম্রাজ্যকে দুর্বল করতে বিভিন্ন আরব গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করেছিল ব্রিটিশ এবং ফরাসিরা। অটোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভু্যত্থানের জন্য তাদের উসকেছিল। ব্রিটিশ এবং ফরাসিরা প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিল, যুদ্ধে অটোমানদের হার হলে, তারা আরবদের স্বাধীনতা দেবে। একটি আরব দেশকে স্বীকৃতি দেবে। যুদ্ধে অটোমানদের পরাজয় হয়, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স জিতে যায়। যুদ্ধের পর অবশ্য কারোরই শিকে ছেঁড়েনি। ফিলিস্তিনকে ব্রিটিশ ম্যান্ডেড হিসেবে ঘোষণা করেছিল ব্রিটেন। কিন্তু, ব্রিটেনের প্রতিশ্রম্নতিতে আশাবাদী ইহুদিরা আরও বেশি সংখ্যায় ফিলিস্তিনে আসা শুরু করে। প্যালেস্টাইনে ইহুদি জনসংখ্যা বাড়তে থাকায় অসন্তুষ্ট হয়েছিল আরবরা। কিন্তু, এর মধ্যেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। জার্মানিতে শুরু হয় নির্বিচারে ইহুদি গণহত্যা, জাতিগত শুদ্ধিকরণ। এর ফলে, প্রাণ বাঁচাতে আরও বেশিসংখ্যক ইহুদি ফিলিস্তিনে পাড়ি দিতে থাকে। ১৯১৮ সালে প্যালেস্টাইনে ইহুদি জনসংখ্যা যেখানে মাত্র ৬ শতাংশ ছিল, ১৯৪৭-এর মধ্যে তা বেড়ে ৩৩ শতাংশে পরিণত হয়।
১৯৪৮-এর ১৪ মে ইসরাইল নিজেদের স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। ওই দিনই ৬ আরব দেশ একযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। বিস্ময়করভাবে, সবকটি আরব দেশকে পরাস্ত করেছিল ইসরাইল। ৫৫ শতাংশ থেকে ফিলিস্তিনের ৭৮ শতাংশ জায়গার দখল আসে ইসরাইলের হাতে। ৭ লাখ ফিলিস্তিন নাগরিক ভিটেছাড়া হন। আর এই যুদ্ধই ছিল আজকের ইসরাইল- ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ভিত্তি। ১৯৫৬ সালে সুয়েজ ক্যানেলকে তাদের জাতীয় সম্পদ বলে ঘোষণা করেছিল মিশর। ইসরাইলের জন্য ওই ক্যানাল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল। মিশর আক্রমণ করে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং ইসরাইল। মিশরের বহু জায়গা দখল করলেও, পরে আন্তর্জাতিক চাপে সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল তারা। তবে, এই যুদ্ধ পরিষ্কার করে দিয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলই পশ্চিমী দেশগুলোর মিত্র শক্তি। ১৯৬৭ এবং ১৯৭৩-এ তৃতীয় ও চতুর্থ আরব-ইসরাইল যুদ্ধেও ইসরাইলকে পরাস্ত করতে পারেনি আরব দেশগুলোর জোট। পরিবর্তে, গাজা, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, সিনাই, গোলান হাইটসের মতো ফিলিস্তিনের আরও অনেক এলাকা দখল করে ইসরাইল।
ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত অনেকদিন ধরে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে চলে আসা সংঘাতকে নির্দেশ করে। একে বৃহত্তর অর্থে আরব-ইসরাইল সংঘাতের একটি উলেস্নখযোগ্য অংশ হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়। দুইটি আলাদা জাতি করার জন্য অনেক পরিকল্পনাই করা হয়েছে। এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে ইসরাইলের পাশে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রও গঠিত হতো। একটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, দুই দেশের অধিকাংশ মানুষই এই সংঘাত নিরসনে অন্য যে কোনো পরিকল্পনার তুলনায় দুই-জাতি পরিকল্পনাকে বেশি সমর্থন করে। অধিকাংশ ফিলিস্তিনি মনে করে, তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র হওয়া উচিত পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকাকে কেন্দ্র করে। অধিকাংশ ইসরাইলিও এই ধারণা সমর্থন করে। হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন শিক্ষাবিদ সবকিছু বাদ দিয়ে একটিমাত্র রাষ্ট্র গঠনকে সমর্থন করে। তাদের মতে সমগ্র ইসরাইল, পশ্চিম তীর ও গাজা মিলে একটি দ্বি-জাতীয় রাষ্ট্র গঠিত হওয়া উচিত যেখানে সবার সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু এ নিয়ে কোনো স্থির সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি। কারণ প্রত্যেকেই অন্যের কোনো না কোনো প্রস্তাবে অসম্মতি জ্ঞাপন করছে। মানচিত্রে ইসরাইল, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও গোলান হাইট্স।
এই সংঘাতে দেশি-বিদেশি অনেক শক্তি ও বিষয় জড়িয়ে পড়েছে। সংঘাতে সরাসরি অংশ নেয়া দলগুলো হচ্ছে- এক পক্ষে ইসরাইল সরকার- যার প্রধান নেতা এহুদ ওলমার্ট। আর অন্য পক্ষে ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) যার প্রধান নেতা বর্তমানে মাহমুদ আব্বাস। এই দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সমঝোতা তৈরিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে কাজ করে কোয়ার্টেট অব দ্য মিড্ল ইস্ট (বা শুধু কোয়ার্টেট) নামে পরিচিত একটি দল। এই দলে কূটনৈতিকভাবে অংশ নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ। আরব লিগ এই সংঘাতের আরেক নায়ক যারা একটি বিকল্প শান্তি পরিকল্পনা পেশ করেছে। আরব লিগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিশর এতে মুখ্য ভূমিকা রাখছে। সবচেয়ে সাম্প্রতিক সময়ের সমঝোতা অনুষ্ঠানটি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের অ্যানাপোলিসে- ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে। এই আলোচনার মাধ্যমে ২০০৮-এর শেষ নাগাদ একটি চিরস্থায়ী শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারী দলগুলো বলেছে, ৬টি প্রধান বিষয় আছে যেগুলোর সমাধান না হলে শান্তি আসবে না। এগুলো হচ্ছে: জেরুসালেম, শরণার্থী, আবাসন, নিরাপত্তা, সীমান্ত এবং পানি। এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে।
১৯৭৮ থেকে ইসরাইল এবং মিশরের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল। আসলে একের পর এক যুদ্ধে হারের পর, আরব দেশগুলোও বুঝে গিয়েছিল রণাঙ্গনে ইসরাইলি বাহিনীকে হারানো সোজা নয়। তার থেকে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ১৯৮২-তে ইসরাইল গাজাসহ বেশ কিছু ফিলিস্তিনীয় এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে। কিন্তু, তারপরও বহু এলাকা তাদের দখলেই থেকে যায়। আজও ফিলিস্তিনি নাগরিকদের সঙ্গে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ করে ইসরাইল সরকার, এমনটাই অভিযোগ বহু মানবাধিকার সংগঠনের। ছলে-বলে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জায়গা-জমি ছিনিয়ে নেওয়া, কথায় কথায় তাদের কারাগারে বন্দি করা, আল আকসা মসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি না দেওয়া, যখন তখন তাদের হত্যা করা, তাদের খাবার-জল-বিদু্যতের মতো প্রাথমিক চাহিদাগুলো থেকে বঞ্চিত করার মতো হাজারো অভিযোগ রয়েছে ইসরাইলের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে, ফিলিস্তিনের দখলে থাকা এলাকাগুলোতেও, বহু সংখ্যায় ইসরাইলি নাগরিকরা বসতি স্থাপন করেছেন। ফলে, দুই দেশ সমাধানও আর প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। কারণ আগের ফিলিস্তিনি জায়গাগুলোর অনেকটাই এখন ইসরাইলিদের দখলে।
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার আগের সংঘর্ষগুলোতে কায়রো মধ্যস্থতা করলেও অধ্যাপক জাওয়েরি মনে করেন, মিশর এখন গাজার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে নিজেদের দূরে রাখার চেষ্টা করবে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি রয়টার্সকে বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হলো রক্তক্ষরণ বন্ধ করা, বন্দিদের মুক্তি এবং এই সংঘর্ষ যাতে আঞ্চলিক পর্যায়ে ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করা। তবে এক ইসরাইলি কর্মকর্তা রয়াটার্সকে নিশ্চিত করেছেন, মধ্যস্থতার জন্য কোনো প্রচেষ্টা হয়নি। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান ইসরাইল ও হামাস উভয়পক্ষকেই সংঘর্ষ বন্ধ করে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন। অধ্যাপক জাওয়েরি বলেন, যদি শান্তি আলোচনা শুরু হয় তাহলে তুরস্ক এবং কাতার উভয় দেশের সক্রিয় ভূমিকা থাকবে। তিনি বলেন, আমার এমন অনুমানের কারণ, এই দুই দেশেরই হামাস এবং ইসরাইলর সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আমাদের দেখতে হবে কারা উভয় পক্ষকে আলোচনায় বসাতে সক্ষম হয়। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এই সংঘাত নিয়ে বিভিন্ন রকম মতামতের সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, সংঘাতটা শুধু ইসরাইল আর ফিলিস্তিনের মধ্যে নয়, উভয়ের অভ্যন্তরেও অনেক অন্তর্দ্বন্দ্ব বিদ্যমান। এই সংঘাতের সবচেয়ে বীভৎস দিক হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি সহিংসতা। অনেকদিন ধরে এই অঞ্চলে এক নাগাড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এই যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। শুধু সামরিক লোকই মারা যাচ্ছে না, সঙ্গে প্রচুর বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
ইসরাইলের হারেৎজ পত্রিকার সাংবাদিক আমোস হারেলের মতে, ইসরাইলের হাতে বিকল্প আছে এখন ৪টি। প্রথমত, বন্দি বিনিময় চুক্তি নিয়ে হামাসের সঙ্গে জরুরি আলোচনা। এই আলোচনায় ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনি- যারা হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত তাদের মুক্তি দাবি করতে পারে হামাস- যা ইসরাইলের মেনে নেওয়ার সম্ভবনা নেই বললেই চলে। দ্বিতীয়ত, গাজায় হামাসকে লক্ষ্য করে আকাশ পথে ব্যাপক অভিযান চালানো, যেখানে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোক নিহত ও আহত হবে। তৃতীয়ত, গাজা উপত্যকা ধরে কঠোর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেখানে অবকাঠামোগত ক্ষতি হবে, মানবিক বিপর্যয় ঘটবে। চতুর্থত, স্থলপথে ব্যাপকভাবে অভিযান চালানো, যেখানে দুই পক্ষেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। গোটা অঞ্চল রণক্ষেত্রে পরিণত হবে। দক্ষিণে ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে হামাস যে সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাকে কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। এটা স্বাধীনতার লড়াই নয়। আবার, গত কয়েক দশক ধরে ইসরাইলিরা যেভাবে ফিলিস্তিনিদের জমি-বাড়ি দখল করেছে, তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, তাকেও সমর্থন করার কোনো জায়গা নেই। তাহলে, মধ্যপ্রাচ্যের এই পরিস্থিতির দায় কার? এটা বুঝতে গেলে আমাদের একটু ইতিহাসের পাতায় নজর দিতে হবে। ইজরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে কেন এই দ্বন্দ্ব? কী নিয়ে দ্বন্দ্ব? এই যুদ্ধের যেন কোনো শেষ নেই। পরিশেষে এই লেখার বিশ্লেষণের পরিপ্রেক্ষিতে
সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জাগে- ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ পরিস্থিতির দায় কার? ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাতে আরব ইসরাইল সংঘাতের অবসান কি সম্ভব হবে? তবে এই সংকট সমাধানের পূর্বে আরব ইসরাইল সংকটের প্রেক্ষাপটকে বুঝতে হবে এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে আরব ইসরাইল দ্বন্দ্বের অবসানে মুসলিম ও আরব বিশ্বসহ সারা বিশ্বকে শান্তি ও মানবিকতার দৃষ্টিভঙ্গিতে এগিয়ে আসতে হবে।
\হ
ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, কলামিস্ট ও গবেষক