শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

খাল যাচ্ছে সিটি করপোরেশনের অধীনে

জলাবদ্ধতা নিরসন হোক
নতুনধারা
  ২৯ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

অবৈধ দখলের কারণে খালের সঙ্গে আশপাশের নদ-নদীগুলোর সংযোগ প্রায় বিছিন্ন- এমন বিষয় বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছে। এ ছাড়া খাল দখল হয়ে যাচ্ছে কিংবা দূষণসহ নানা কারণে নগরের জলাবদ্ধতার বিষয়টিও বহুল আলোচিত। এমন অবস্থায় যখন জানা যাচ্ছে, ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সব খাল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে- তখন তা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সিদ্ধান্তের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখন সিটি করপোরেশন কীভাবে কাজ করবে তাদের সক্ষমতা যাচাই করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রিপোট দেবে, যে রিপোর্টের আলোকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উলেস্নখ্য, রাজধানীর খালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে দিতে নীতিগত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, এক সময় খালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতেই ছিল। পরে কোনো এক সময়ে রাষ্ট্রপতির আদেশে তা ঢাকা ওয়াসার হাতে দেওয়া হয়। আর রাজধানীর সিটি করপোরেশনের দুজন মেয়র এবং তারা খালের দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেও জানা যাচ্ছে। ফলে এ বিষয়ে যে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে তার সঠিক বাস্তবায়ন হোক এবং জলাবদ্ধতা নিরসন, শহরের সৌন্দর্য বর্ধনসহ সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখুক এমনটি কাম্য।

বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজধানীর ঢাকার নানা সংকটের মধ্য জলাবদ্ধতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক একটি সংকট। কেননা দেখা যায়, বৃষ্টি হলেই রাজধানীবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ যেন এক নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতায় স্বাভাবিক জীবন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অথচ একটি দেশের রাজধানীর এ অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিভিন্ন সময়েই এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে, বৃষ্টিকে কেন্দ্র করে এ দুর্ভোগের কারণই হলো অপরিকল্পিত নগরায়ণ ব্যবস্থা যেখানে, বৃষ্টি পানি পড়লেই তা আটকে থাকে। ফলে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে যদি নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিটি করপোরেশন যথাযথভাবে কাজ করতে পারে তবে তা অত্যন্ত সুখকর হবে বলেই আমরা মনে করি।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেছেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য জনবল, যন্ত্রপাতিসহ সবকিছুই সিটি করপোরেশনের কাছে আছে, তাদের সক্ষমতা আছে। অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা আছে। কিছু বক্স কালভার্ট করা হয়েছে, এগুলো ২০-৩০ বছর সংস্কার করেনি, ফলে পুরোটাই অকার্যকর হয়ে গেছে। তার ভিতরে মিলিয়ন মিলিয়ন টন বর্জ্য জমা হয়ে এখন সেটা অকার্যকর। সেটা কীভাবে করা যাবে তা নিয়ে কারিগরি টিম পর্যালোচনা করবেন যাতে একটা সময়ের ব্যবধানে যেন হস্তান্তর করা যায়। আমরা মনে করি এ বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করবেন। কেননা জলাবদ্ধতা নাগরিক জীবনের একটি বড় ধরনের সংকট, যা নিরসনের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রাজধানী ঢাকায় সচল খালের সংখ্যা কমে গেছে এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর প্রভাবশালীদের দখলে হারিয়ে গেছে ঢাকার অধিকাংশ খাল, এমন বিষয়ও এর আগে পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। খাল নামে-বেনামে দখল হয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগও এসেছে। যা আমলে নিতে হবে। আমরা মনে করি, দখল, দূষণ, সংস্কার থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করলে জলাবদ্ধতা নিরসনে তা কার্যকর প্রভাব রাখবে। ফলে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সব খাল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার সঠিক ও যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা মনোযোগী হবে এবং জলাবদ্ধতার মতো দুর্ভোগ নিরসনে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে