বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দলবেঁধে ধর্ষণ

অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি
নতুনধারা
  ২১ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

দেশে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে কোনো রকম প্রতিকারহীনভাবে। বিশেষ করে শিশু ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ ধরনের অপরাধ বাড়ার মূল কারণ। ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয় স্পষ্ট দিক হলো- স্থানীয় প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত ব্যর্থতা।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর মিরপুরে এক তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- রায়হান, ইমন, আবু সাইদ, আলামিন, জয় মিয়া ও ইমরান। তাদের সবার বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া চাঁদপুরে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১০) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী শিশুটির মা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আমরা কোনোভাবেই সমাজে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি না। এটা আমাদের জাতীয় ব্যর্থতা। আমরা এ ধরনের উদ্বেগজনক ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মনে রাখতে হবে, সামাজিক অস্থিরতা ও বিচারহীনতার কারণেই যৌন সহিংসতা, নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও হয়রানি বাড়ছে। অপরাধ করে নিষ্কৃতি পাওয়ার একটি সংস্কৃতি দেশে চালু রয়েছে। যদিও সরকার এ ব্যাপারে বেশ কঠোর। এর পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয়ও একটা কারণ। সব ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা মিডিয়ায় আসে না। প্রকৃতপক্ষে ঘটনার ভয়াবহতা অনেক বেশি। রক্ষণশীল সমাজ হিসেবে বাংলাদেশের নারীদের লোকলজ্জা, সামাজিক মর্যাদা, মামলা করে হয়রানি এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে অসংখ্য ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে। ফলে অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে না। উপরন্তু অপরাধে উৎসাহিত হচ্ছে। যদিও সরকার সম্প্রতি আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃতু্যদন্ড করেছে।

এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এটা ভাবতে বিস্ময় জাগে, কোনোভাবেই আমাদের সমাজ যেন সুস্থতার দিকে অগ্রসর হতে পারছে না। অবক্ষয় যেমন আমাদের সমাজকে দিন দিন গ্রাস করছে।

ইদানীং নারী অবমাননা চরম আকার ধারণ করেছে। সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার কারণেই মূলত এমনটি হচ্ছে। যেভাবেই হোক, সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। যারা সমাজকে পদে পদে কলুষিত করছে, সমাজকে ভারসাম্যহীন ও দূষিত করে তুলছে, সমাজে নারীদের নিরাপত্তা বিপন্ন করছে- তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ জন্য ব্যাপকভাবে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন।

অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তিই কেবল পারে এ ধরনের জঘন্য অপরাধ থেকে মানুষকে নিবৃত করতে। তবে সবার আগে জরুরি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। নারীকে নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। কেবল তা হলেই সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে