শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

মোকাবিলায় উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ১৯ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি। মহামারি করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিও টালমাটাল। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রত্যেকটি খাত। অন্য দিকে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও ব্যাহত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন অচলাবস্থা চলার পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বিশ্ব। অনেক দেশে করোনা সংক্রমণের হার কমতেও শুরু করেছে। কিন্তু উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এরই মধ্যে বিশ্বে ফের আসছে করোনাভাইরাসের আরও একটি প্রবাহ। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে, করোনাভাইরাস মহামারির সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখে পুরো বিশ্ব। নিয়ন্ত্রণে আসা ইউরোপে করোনাভাইরাস ফের ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ইংল্যান্ড-ইতালিসহ নানা দেশে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফ্রান্স, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে নতুন করে লকডাউন দিয়েছে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় নানা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো।

এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, বাংলাদেশে হঠাৎ করে সংক্রমণের হার ও মৃতু্যর হার বেড়ে গেছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও এখনই এটাকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বলতে চাচ্ছেন না স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া জরুরি যে, এমন বিষয় আলোচনায় আসছে, দ্বিতীয় ঢেউ যদি নাও হয় তবু এখনই কঠোর ব্যবস্থা ও সচেতনতা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করা। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা প্রয়োজন, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের আগমনী বার্তায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আশঙ্কা আছে। যদিও শীতকালে করোনার সংক্রমণ বাড়ে আর গ্রীষ্মকালে কমে এটা এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। তাই শীতে করোনা বেড়ে যাবে তার পক্ষে জোড়ালোভাবে যুক্তি দেওয়া যাবে না। এছাড়াও আবহাওয়ার সঙ্গে করোনার কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তার বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ এখনো স্পষ্ট নয়। দেখা গেছে, একপর্যায়ে করোনা শীত-গ্রীষ্ম মানেনি, বরং শীত, গরম এমনকি নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার দেশগুলোতে নির্মমভাবে তার থাবা বসিয়েছে।

আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। জানা গেছে, ইতোমধ্যে করোনার সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে কঠোর হতে শুরু করেছে সরকার। রাজধানীতে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধীরে ধীরে সারাদেশে এ অভিযান চলছে। আপাতত লকডাউন করার কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর হবে সরকার এমনটিই জানা গেছে।

আমরা বলতে চাই, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সঙ্গত কারণেই সরকারকে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি যেন মানুষ মেনে চলে সেই লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা মনে করি, একদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে অন্যদিকে করোনাকালে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে নানাভাবে সেগুলোকে সামনে রেখে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা জরুরি, এই ভয়াবহ সময়কে মোকাবিলা করার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন ভিন্ন পথ নেই। এর আগে ডবিস্নউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, সুতার ওপর ঝুলে থাকা কোটি কোটি মানুষের জন্য কোভিড-১৯ ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। আর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসার বিষয়টিও তিনি আলোচনায় এনেছিলেন। সঙ্গত কারণেই, যখন করোনার দ্বিতীয় প্রবাহের আশঙ্কা উঠে আসছে তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনা ভাইরাসের কারণে নানামুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা আসছে, সঙ্গত কারণেই সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতা এ সময়টা সবচেয়ে বেশি জরুরি। সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে