দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃতু্য দুটোই বেড়েছে। যার কারণে সারাদেশে আবার উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশে ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ১৩৯ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে- যা গত ১০ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে এর চেয়ে বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল গত ৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন ২ হাজার ২০২ জন রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত নতুন ২ হাজার ১৩৯ জনকে নিয়ে দেশে মোট ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪৭২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আরও ২১ জনের মৃতু্য হওয়ায় দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২১৫ জনে। সোমবার বিকালে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সর্বশেষ এই পরিস্থিতি তুলে ধরেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ৩০ জুন একদিনেই ৬৪ জনের মৃতু্যর খবর জানানো হয়- যা একদিনের সর্বোচ্চ মৃতু্য।
এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর হচ্ছে সরকার। জনসাধারণকে মাস্ক পরাসহ সচেতনতা বাড়াতে ঢাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ এ কথা জানান। দুয়েকদিনের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃতু্য বাড়ার কারণে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও অনেকেই তা মানছে না। সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
উলেস্নখ্য, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত জুলাই মাসের শেষ দিকে বাসার বাইরে সব জায়গায় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে সরকার। সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমনাও করা হচ্ছে। এবার পরিচালিত হবে রাজধানী ঢাকায়। অতি সংক্রামক এই ভাইরাস প্রতিদিনই মানুষের মৃতু্য ডেকে আনলেও নানা অজুহাতে এখনো অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছেন না।
সারা বিশ্বে মহামারি হয়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউনের চেয়েও সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো মাস্ক ব্যবহার করা। কারণ করোনাভাইরাস মূলত বাতাসে ডপলেটস বা মুখ থেকে নিঃসৃত মিহি জলকণার মাধ্যমে ছড়ায়। আর মাস্ক ব্যবহার করলে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় বলে এক গবেষণায় বলা হয়েছে।
দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের দেশের জনগণ মাক্স পরার ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তারা কেন মাস্ক পরছে না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। তা মানছে না। মাক্স পরা ছাড়া যে যার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাস্তায় বের হলেই এই ধরনের দৃশ্য চোখে পড়ে। আমরা মনে করি, সরকারকে এ ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা উচিত। দেশের সব জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অন্য বিকল্প নেই।