শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক ডাকাতি

রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১৭ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা জনমনে আতঙ্ক তৈরি করবে এটাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া বিভিন্নভাবে ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো এ সব ঘটনার কারণে আর্থিক ক্ষতিসহ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে যা আমলে নেওয়ার বিকল্প থাকতে পারে না। প্রসঙ্গত বলা দরকার, ব্যাংক ডাকাতির মতো ভয়াবহ ঘটনা ফিল্মি স্টাইলে ঘটছে- যদি এমনটা জানা যায় তবে তা কতটা বিপজ্জনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এ ধরনের ঘটনাগুলো আমলে নেওয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করা।

উলেস্নখ্য, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারে অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে রোববার বেলা সোয়া ১টার সময় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল এ সময় অস্ত্রের মুখে ব্যাংকের সবাইকে জিম্মি করে নগদ পৌনে ৯ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে এমনটিও জানা যাচ্ছে। আর এ ঘটনার খবর পেয়ে দ্রম্নত উথলী বিশেষ ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য ও জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া পিস্তলের অংশবিশেষ উদ্ধার করেছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে চাই, যখন দিনে দুপুরে ব্যাংক ডাকাতি হচ্ছে তখন এর ভয়াবহতাকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। উথলী সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, হেলমেট এবং পিপিই পরিহিত অবস্থায় মোটরসাইকেলযোগে ৩ জন এসে ব্যাংকে প্রবেশ করে। এরপর তারা পিস্তল উঁচিয়ে ব্যাংকের দরজা বন্ধ করে দেয়। তারা ব্যাংকের সবার মোবাইলগুলো নিয়ে নেয় এবং একটি কক্ষে সবাইকে আটক করে। পরে ব্যাংকের ভোল্টারে রক্ষিত টাকাসহ কাউন্টারে থাকা পৌনে ৯ লাখ টাকা লুট করে নেয়। এ সময় টাকা তুলতে আসা এক গ্রাহক চিৎকার শুরু করলে বাজারের লোকজন ডাকাত দলের সদস্যদের ধাওয়া করলে তারা পিস্তল উঁচিয়া লোকজনকে গুলি করার হুমকি দেয়। লোকজন তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল মারতে থাকলে ডাকাত দল মোটরসাইকেলযোগে দ্রম্নত পালিয়ে যায়। এমন তথ্যও উঠে আসছে যে, সবমিলিয়ে ডাকাত দল ৫ মিনিটের ভেতর টাকা লুট করে পালিয়েছে।

আমরা মনে করি, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। আমলে নেওয়া দরকার, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার বলেছেন, ব্যাংকে সিসি ক্যামেরাসহ নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল। এ প্রসঙ্গে আমরা বলতে চাই, বর্তমান বাস্তবতায় ব্যাংকের মতো গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যদি সিসি ক্যামেরাসহ নিরাপত্তার ঘাটতি থাকে তবে তা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। সঙ্গত কারণেই এ ঘটনাকে আমলে নিয়ে সারাদেশের ব্যাংকগুলোতে যেমন সিসি ক্যামেরাসহ নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন, তেমনিভাবে ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা যেন কেউ ঘটাতে সাহস না পায় সেই লক্ষ্যে সব ধরনের প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি করে অর্থ লুট করে ডাকাত দল পালিয়ে যাবে, এ পরিস্থিতি অত্যন্ত উৎকণ্ঠার, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ডাকাতির ঘটনা ঘটানো এ ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারসহ লুট হওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশ মাঠে কাজ করছে বলেও জানা গেছে। আমরা চাই, এ ঘটনাকে সামনে রেখে দেশের ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রশ্নে সংশ্লিষ্টরা আরও বেশি তৎপর থাকবে, যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

সর্বোপরি বলতে চাই, পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায়, ছিনতাই, ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটে; যেগুলো সামগ্রিকভাবে ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আর বর্তমান বাস্তবতায় ব্যাংকের মতো গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতি হবে এটা অত্যন্ত আশঙ্কার বিষয়। সঙ্গত কারণেই এ ধরনের ঘটনা রোধ করতে হবে। একই সঙ্গে যারা এ সব অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে