শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক

যাত্রীবাহী বাসে আগুন

নতুনধারা
  ১৪ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

যে কোনো পরিস্থিতিতে জ্বালাও-পোড়াও, সহিংসতা, নাশকতাসহ এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে; যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজধানী ঢাকায় আবারও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটল। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলার মধ্যেই রাজধানীর ৭ স্থানে ৯টি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে রাজধানীর শাহবাগ, মতিঝিল, নয়াবাজার, ভাটারা, শাহজাহানপুর, প্রেসক্লাব সংলগ্ন সচিবালয় মোড় ও গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সব ঘটনা ঘটে। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানা গেছে।

পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দাবি, ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে একটি মহল বাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়িত বলেও জানিয়েছেন তারা। অন্যদিকে দুটি আসনের উপনির্বাচনের ভোটকেন্দ্র দখলের ঘটনাবলি আড়াল করতেই ক্ষমতাসীনরা রাজধানীতে বিভিন্ন গণপরিবহণে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি, এমনটিও খবরে উঠে এসেছে। এ ছাড়া প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বাস পোড়ানোর ঘটনায় ৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার ডিএমপির ৫ থানায় দায়ের করা এ সব মামলায় আসামি করা হয়েছে দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে। এদের মধ্যে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকাংশই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এমনটিও জানা গেছে।

আমরা বলতে চাই, যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, যে কোনো পরিস্থিতিতে, জনমনে ভীতি ছড়ানো, বাসে অগ্নিসংযোগসহ, সহিংসতার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে যে কেউ উদ্যত হলে তা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে তবে তা অত্যন্ত পরিতাপের; যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে আমরা উলেস্নখ করতে চাই, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন জানিয়েছেন, রাজধানীতে কয়েক স্থানে বাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাগুলো পরিকল্পিত এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক বলেও ধারণা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। যারাই বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

প্রসঙ্গত আমরা এটাও বলতে চাই, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এভাবে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে যে বা যারাই এমন ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেষ্টা করুক না কেন, কিংবা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করুক, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং এ ধরনের ঘটনা যেন কেউ না ঘটাতে পারে সেই লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যে বা যারাই এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন তাদের প্রতি কোনো অনুকম্পা প্রদর্শন নয়; বরং আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, এ ধরনের ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।

সর্বোপরি বলতে চাই, এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক। পাশাপাশি এটা অনুধাবন করা জরুরি যে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা বা অস্থিতিশীলতার উদ্দেশ্য যদি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয় তবে তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিকেই স্পষ্ট করে যা আমলে নেওয়া জরুরি। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়েই বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। যে বা যারাই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করবে তাদের অপতৎপরতা রোধে উদ্যোগী হতে হবে। এবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক পাশাপাশি এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সামগ্রিক পদক্ষেপ জারি থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে