শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৬৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধার

কঠোর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ০৮ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

দেশে সোনা আমদানির অনুমতি দেওয়ার পরও সোনা চোরাচালান রোধ করা যাচ্ছে না। এটা এক বিপজ্জনক বার্তা। এ ক্ষেত্রে কাজ করছে বড় ধরনের দেশি ও বিদেশি সিন্ডিকেট। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক চক্র বাংলাদেশকে সোনা চোরাচালানের বড় ধরনের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। আবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোনা চালানের বিষয়টি সামনে এলো। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাই থেকে আসা একটি পেস্নন থেকে ৬৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। শুক্রবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এ স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করে নজরদারি করতে থাকে কাস্টমস গোয়েন্দারা। এ সময় দুবাই থেকে আসা বিমানের একটি ফ্লাইটে তলস্নাশি করা হয়। ওই পেস্ননের টয়লেটে টিসু্য রাখার বক্সের নিচের চেম্বারে অভিনব কায়দায় লুকানো ৬৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। যার মোট ওজন ৭ কেজি ৮০০ গ্রাম। উদ্ধার করা স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৭৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

এমন সংবাদ কতটা উদ্বেগের তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর আগে এমন খবরও সামনে এসেছে, যাদের চোরাচালান রোধ করার দায়িত্ব তাদের মধ্যেও কেউ কেউ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে সোনা চোরাচালান চক্রের সঙ্গে। চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছিল গোয়েন্দারা। আমরা মনে করি, সোনা চোরাচালানসংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

বলা দরকার, বাংলাদেশ যে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করতে চোরাচালানকারীরা তৎপর তা বিভিন্ন সময়ের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়। এর আগেও হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময়ে সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। প্যান্টের ভেতর, কম্বলের ভেতর কিংবা বিমানের টয়লেটে, এমনকি যাত্রীর জুতায়, মানিব্যাগে, লাগেজে, হ্যাঙ্গার গেটে সর্বত্রই পাওয়া গেছে সোনার বার বিভিন্ন সময়ে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তলস্নাশি চালিয়েও উদ্ধার করছে সোনার বার। দেশের সীমান্ত এলাকায়ও ধরা পড়ছে সোনার চোরাচালান। আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হতে হবে। কেননা, এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে তা দেশের জন্য বিপজ্জনক। এটা দেশের ভাবমূর্তিরও প্রশ্ন।

সর্বোপরি বলতে চাই, এবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া সমীচীন, যারা সোনার চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত তারা রাতারাতি ধনী হতে চায় এবং তারা দেশ ও জাতির শত্রম্ন, মানুষের শত্রম্ন। কেননা, এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মনে করি, এটা খুবই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং এ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। দেশ থেকে চোরাচালান একেবারেই বন্ধ হোক এমনটি সবার কাম্য। আর সে জন্য সক্রিয় হতে হবে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদেরই। স্মরণে রাখতে হবে, চোরাচালান রোধের দায়িত্ব যাদের, তারা যদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তা হলে সমস্যার সমাধান হবে কীভাবে? আর কীভাবেই বা চোরাচালান রোধ হবে? সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে সোনা চোরাচালান রোধ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে