শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বগতি

মো. হাছিবুর রহমান ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ চট্টগ্রাম
  ২৮ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

বর্তমান বাংলাদেশে কিছুদিন পরপরই নিত্যপণ্যের দাম কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ছে। প্রতি বছরই বেশ কয়েকবার নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। বিশেষভাবে পেঁয়াজ এবং বর্তমানে আলু। বিভিন্ন সময়ে এ বাড়তি দামের পেছনে একদল অসাধুচক্র থাকে, যারা এ অসময়ে নিজেদের পকেট ভরতে ব্যস্ত থাকে।

ভোক্তারা যা কখনোই আশা করেনি, তাই এখন হচ্ছে। আলুর কেজি ৫০ টাকা। আলু উৎপাদনকারী মূল কৃষক আলু বিক্রি করে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে। সরকারি হিসাব মতে, আলুর দাম ৩০ টাকা হওয়ার পরও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। বাজার মনিটরিংয়েও কোনো সুফল আসছে না। হঠাৎ আলুর দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ার বিশেষ কোনো কারণ নেই বললেই চলে তবুও কারণ খুঁজতে গেলে সামনে চলে আসে, সাধুরূপী কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট কান্ড। প্রতিবারই, নিত্যপণ্যের দামের পেছনে এ সিন্ডিকেট কান্ডের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। তবুও এর কোনো পরিত্রাণ নেই। অথচ আলু এবং পেঁয়াজ কোনো বিলাসিতার খাদ্যদ্রব্য নয়। এ সব আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় খাবার। আলু এবং পেঁয়াজ ছাড়া আমাদের নিত্যদিনের খাদ্যতালিকা চিন্তাও করা যায় না। এরপরও বারবার নিত্যপণ্যের দাম এভাবে বেড়ে যায়, আর সাধারণ ভোক্তারাই ভোগে। পেঁয়াজ নিয়ে বিগত ২ বছরে বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমরা দেখেছি।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানির শীর্ষ-বাজার বাংলাদেশ। কিন্তু বারবারই আমরা লক্ষ্য করেছি, বিভিন্ন সময়ে ভারত তার রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন কিংবা অন্যান্য অনেক কারণে পেঁয়াজ রপ্তানি সাময়িক বন্ধ রেখেছে। আর এ সাময়িক বন্ধের সময়েই বাংলাদেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ গুদামে মজুত রেখে কৃত্রিম সংকটের কৃষ্টি করেছে। এতে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ৩ থেকে ৪ দিনের মাথায় পেঁয়াজের কেজি ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় উন্নীত হয়েছিল। সাধারণ ভোক্তাদের নিরুপায় হয়ে এ চড়া দামে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছিল, যেন পেঁয়াজের হাহাকার চলছিল! অথচ কিছু তালাবদ্ধ গোডাউনে তখনও বস্তায় বস্তায় পেঁয়াজ ছিল। কিন্তু সেই গোডাউন মালিকরা কেউ সাধারণ ভোক্তাদের কথা একবার মনেও করেনি, ভাবার কথা তো রোদেলা আকাশে তারা খোঁজার মতো। ঠিক এর কয়েকদিন পরই, পেঁয়াজের এ অচলাবস্থা চলাকালে, বেশ কিছু জেলা শহরে ওই অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ নদী-নালা খাল-বিলে থাকা মাছ ও অন্যান্য কীটপতঙ্গের খাবার বানিয়েছে, কারণ পেঁয়াজ অতি গরমে গুদামজাত রাখার ফলে পচে নষ্ট হয়েছে। এভাবে প্রায় কয়েক টন পেঁয়াজ পচে যাওয়ার ফলে ফেলে দিয়েছে। এটা কী ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন নয়!

পেঁয়াজ কান্ড কিংবা নিত্যপণ্যের দাম কিছুদিন পরপরই অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়া, বাজার মনিটরিংয়ে সুফল না আসা, এ সব ঘটনার পেছনে মূলত কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বা গোষ্ঠী রয়েছে যারা দেশ অচল করে দেওয়ার ইচ্ছাপোষণ করেই এমন কান্ড ঘটাচ্ছে, এরা প্রতিবারই ধরাছোঁয়ার আড়ালে থেকে যাচ্ছে। এ অসাধু ব্যবসায়ী/গোষ্ঠী কখনোই দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে না, এরা নিজেদের পেট ভরা নিয়েই চিন্তিত। এরা দেশ ও জাতির চরম শত্রম্ন। আশা করি, প্রশাসন খুব দ্রম্নতই এ অসাধু ব্যবসায়ীদের/গোষ্ঠীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনবেন। এতে নিত্যপণ্যের দাম জনগণের হাতের নাগালে আসবে এবং একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধশালী জাতি গড়ে উঠবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<116805 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1