করোনা শনাক্ত ৪ লাখ

পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সারাবিশ্বই করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি। দেশেও থেমে নেই করোনার সংক্রমণ ও সংক্রমণে মৃতু্য। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তথ্য মতে, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও এক হাজার ৪৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়; এতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছে ৪ লাখ ২৫১ জনে এবং একদিনে এই ভাইরাসে আরও ১৫ জনের মৃতু্য হওয়ায় মৃতের সংখ্যা পৌঁছে ৫ হাজার ৮১৮ জনে। প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার, বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চার কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ ছাড়িয়েছে। আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ইতিমধ্যে ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। বিপর্যস্ত হয়েছে প্রায় প্রত্যেকটি খাত। মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও বিঘ্নিত হয়েছে। সঙ্গত কারণেই এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, করোনা রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সর্বাত্মক উদ্যোগ জারি রাখার বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, পত্রপত্রিকার খবরে মাস্ক পরায় অনাগ্রহসহ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকে, এমন বিষয়ও উঠে এসেছে। যা করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিবন্ধক। আমরা মনে করি, যখন দেশে ৪ লাখ করোনায় আক্রান্ত- এই বিষয়টিকে তখন সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, সেটা সাড়ে তিন লাখ পেরিয়ে যায় ২১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়- যা একদিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। আমরা মনে করি, করোনার সংক্রমণ থেমে নেই- এই বিষয়টিকে আমলে নিয়ে, দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও সামগ্রিক প্রস্তুতির বিষয় খতিয়ে দেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রাখতে হবে। এর পাশাপাশি করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে সচেতন করা ও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য। উলেস্নখ্য, সম্প্রতি প্রকাশিত খবরের এমনটিও উঠে এসেছিল যে, দেশের সবচেয়ে জনবহুল ও ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা মহানগরীতে স্বাস্থ্যবিধি পালন আবশ্যকীয় স্থান হিসেবে যেগুলো পরিচিত, সেসব জনসমাগমস্থলেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। এছাড়া দূরপালস্নার বাসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানা হলেও রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য শহরগুলোতে চলাচল করা গণপরিবহণের ক্ষেত্রে তা অনেকটাই উপেক্ষিত। অন্যদিকে এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে শিগগিরই আসন্ন শীতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কার আশঙ্কাও উঠে এসেছে। এমন অবস্থায় জনসচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা মনে করি, করোনা সংক্রান্ত দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যেন যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সেই বিষয়টিকে সামনে রেখে উদ্যোগ নিতে হবে। এর আগেও করোনাসংক্রান্ত নানা ধরনের বিষয় আলোচনায় এসেছে। অনেকেই অকারণে ঘোরাঘুরি করছে, মাস্ক পরছেন না, স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনাগ্রহ এসব বিষয় এর আগেও উঠে এসেছে। এছাড়া ফি কমানোর পরও করোনার টেস্টের সংখ্যা কমে আসার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছিল। দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা নিয়ে নানামুখী বিতর্ক এক সময়ে জালিয়াতি ও ভুয়া টেস্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। ফলে সার্বিক বিষয়গুলো মাথায় রেখেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়ল এবং মৃতু্য ৫ হাজার পেরিয়ে গেছে। ফলে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, সারাবিশ্বই কার্যত করোনার কারণে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি। আর এই মহামারি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি ভিন্ন কোনো পথ নেই। ফলে যে সংকটগুলো সামনে আসছে তা আমলে নিতে হবে এবং প্রত্যেকেই যেন সচেতন হয় সেই বিষয়কে সামনে রেখে উদ্যোগী হতে হবে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুক এমনটি কাম্য।