মাস্ক পরা ছাড়া সেবা নয়

এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সরকারি অফিসের পাশাপাশি বেসরকারি অফিসগুলোতেও মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। মাস্ক ছাড়া কেউ কোনো সেবার জন্য গেলে তাকে সেই সেবা দেওয়া হবে না। এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে মন্ত্রিসভা বৈঠকে। শীতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে পারে ধরে নিয়ে চারিদিকে 'ম্যাসিভ ইনস্ট্রাকশন' দেওয়া হয়েছে। যতগুলো ইনস্টিটিউশন আছে, সোশ্যাল, অর্গানাইজেশনাল বা ফরমাল প্রতিষ্ঠানে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সব জায়গায়, সব প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, শপিংমল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক ও ধর্মীয় সম্মেলনে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া পাঁচ হাজার ১০০ চিকিৎসক এবং এক হাজার ৭০০ নার্সকে আইইডিসিআরের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের ম্যানেজমেন্ট ও ইনফেকশন প্রিভেনশন কন্ট্রোল বিষয়ে ওরিয়েনটেশন দেওয়া হয়েছে। যার ফলে তারা মাঠ পর্যায়ে করোনা মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছেন বলে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সরকারের এই উদ্যোগ ইতিবাচক। আমরা যদি অতীতের দিকে ফিরে তাকাই তবে এটা নিশ্চই স্মরণে আসবে, মাস কয়েক আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। দেশের কোথাও কোথাও ভ্রাম্যমাণ আদালতও সক্রিয় ছিল। তারপরেও মাস্ক পরার ব্যাপারে সবাই উদাসীন। কী কারণে দেশের মানুষ করোনাভাইরাসকে হেয়ালির চোখে দেখছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে প্রায়ই শোনা যায়, দেশে কোনো করোনাভাইরাস নেই। এই ধরনের মন্তব্য বিস্ময়কর। এর ফলে করোনা ঝুঁকি আরো বেড়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের আরও একটি প্রবাহ অর্থাৎ দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। আসন্ন শীত মৌসুমে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে- জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এমন আশঙ্কার পর তা মোকাবিলায় গত সেপ্টেম্বরে সরকারের পক্ষ থেকে এর রোডম্যাপও তৈরি করা হয়েছে। রোডম্যাপ তৈরি করা হলেও তা কার্যত নথিবন্দি হয়ে আছে। মনে রাখতে হবে, আগাম প্রস্তুতি নাজুক হলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বা সেকেন্ড ওয়েভ সামলানো কঠিন হবে। এতে সংক্রমণের সঙ্গে পালস্না দিয়ে মৃতু্যর সংখ্যাও বাড়বে। যদিও সরকারের নীতিনির্ধারকরা এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন। দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার। এটা সত্য, সারা বিশ্বে মহামারি হয়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউনের চেয়েও সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো মাস্ক ব্যবহার করা। কারণ করোনাভাইরাস মূলত বাতাসে ডপলেটস বা মুখ থেকে নিঃসৃত মিহি জলকণার মাধ্যমে ছড়ায়। আর মাস্ক ব্যবহার করলে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়। সঙ্গত কারণেই সবাইকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে হবে। দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের দেশের জনগণ মাস্ক পরার ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তারা তা মানছে না। মাস্ক পরা ছাড়া যে যার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাস্তায় বের হলেই এই ধরনের দৃশ্য চোখে পড়ে। বাসে হাটবাজারের দৃশ্যও একই। ফলে বিপদ বাড়ছে। আমরা মনে করি, সরকারকে এ ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা উচিত। যারা মাস্ক না পরে বাইরে বের হবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।