জাল এনআইডি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জাল ও ভেজালে ছেয়ে গেছে দেশ। খাদ্যপণ্যে ভেজাল, টাকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি, স্বাক্ষর জাল করে অর্থ-সম্পদ আত্মসাতের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। সম্প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরিতে বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এনআইডি তৈরিতে বড় ধরনের জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জাল এনআইডি তৈরি করে ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলন, ঋণের জন্য আবেদন- এমন ৩০টির বেশি এনআইডির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিবি পুলিশ। এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর ফলে দেশে দুর্নীতি আরও বেড়ে যাবে। ব্যাংক ঋণ পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন বু্যরোর (সিআইবি) প্রতিবেদন লাগে। জাল এনআইডির বিপরীতে ঋণ নেওয়া এবং ঋণের জন্য আবেদন করেছেন এমন ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি প্রতিবেদন পেতে গত সোমবার আদালতে আবেদন করেছেন ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা। জাল এনআইডিতে ঋণ নিয়েছেন এমন কয়েকজনকে শনাক্ত এবং নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ঋণপ্রাপ্তিতে সহযোগিতাকারী ব্যাংক কর্মকর্তাদের তালিকা করা হয়েছে। সিআইবি প্রতিবেদন পেলে উঠে আসবে কোন ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা, কীভাবে ঋণ প্রদান করেছেন। তথ্য মতে, ব্যাংকে কেউ ঋণখেলাপি হলে তাদের সিআইবি রিপোর্ট খারাপ হয়। তারা আবার ব্যাংকে লোন আবেদন করতে পারেন না। তখন এই চক্রের সদস্যরা লোন পাস করিয়ে দেবে মর্মে প্রথমে জালজাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে লোন পাস হলে মোট লোনের ১০ শতাংশ হারে দিতে হবে মর্মে চুক্তি করেন। চুক্তিতে একমত হলে তারা প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। পরে লোন পাস হলে চুক্তি অনুযায়ী লোনের সম্পূর্ণ টাকার ১০ শতাংশ হারে গ্রহণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে- সব মিলিয়ে জালিয়াতি করে নেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছে গ্রেপ্তারকৃতরা। আমরা মনে করি, জালিয়াত চক্রের যারা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। এনআইডি জালিয়াতিতে জড়িত যে-ই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশনের কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধেও কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। কারণ এর ফলে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। ইতিমধ্যে ডা. সাবরিনার দুটো এনআইডি রয়েছে, এমন প্রমাণ উঠে আসায় নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় দেশবাসী হতবাক হয়েছে। এনআইডি জালিয়াতির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। কারা কারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। আইনের কোনো ফাঁকফোকরে যেন জালিয়াত চক্রের কেউ বেরিয়ে যেতে না পারে সে জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। সরকারের কার্যকর ও পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে এ ধরনের জালিয়াতির পুনরাবৃত্তি রোধ করতে এবং এর কোনো অন্য বিকল্প নেই।