শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন করোনা মোকাবিলায় মার্কেল জেসিন্ডাকে ছাড়িয়ে প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

করোনাসংকট মোকাবিলায় অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও জেসিন্ডা আরডার্নের মতো বিপুল সম্পদের সহায়তা তিনি পাননি। সীমিত সম্পদ ও আয়তন এবং বিপুল জনসংখ্যার মধ্যে সুসমন্বয়ের মাধ্যমে তিনি অকল্পনীয় দৃঢ়তায় করোনার আগ্রাসন মোকাবিলা করে চলেছেন। সে জন্য অনেক বিশ্লেষকই বলেন, করোনা মোকাবিলায় মার্কেল ও জেসিন্ডাকেও ছাড়িয়ে গেছেন প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সংগ্রামী ও দৃঢ়চেতা মনোবলসম্পন্ন সরকারপ্রধানকে ৭৪তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
মো. শহীদ উলস্নাহ খন্দকার
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা ডোরোটেয়া মার্কেল এবং নিউজিল্যান্ডের প্র্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা কেট লরেল আরডার্ন যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। এই দুই নারী নেতার গৃহীত পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়। মহামারি করোনা জার্মানি, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বজুড়েই আঘাত হানে। ছোট-বড়, উন্নত-অনুন্নত সব দেশেই কমবেশি বিপর্যস্ত হয় এর ছোবলে। এই মহামারির ঢেউ এসে আঘাত হানে বাংলাদেশেও। প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই করোনাকে সামাল দিতে পারলেও নারী নেতৃত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে মার্কেল ও জেসিন্ডাকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম সেভাবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরা হয়নি। প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে হতোদ্যম হননি। করোনা মোকাবিলায় তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন। আশা করা যায়, তার নিরলস পরিশ্রম ও অদম্য মনোবলের কারণে বিশ্বেও অনেক উন্নত দেশের আগেই করোনা বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে। মার্কেল ও জেসিন্ডা বেশ প্র্রশংসা কুড়ালেও জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডে করোনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে বিদায় নেয়নি। এ দুই নারী নেতার পক্ষে কেন করোনাকে তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব হয়েছে, তার সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্র্রয়োজন। করোনা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়, এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। করোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা একটি গুরুত্বপূূর্ণ বিষয়। জনবিরল দেশে এই ভাইরাস মোকাবিলা যত সহজে সম্ভব, জনবহুল দেশে তা তত সহজ নয়। জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডের পক্ষে করোনা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব হয়েছে মূলত দেশ দুটির বিশাল আয়তনের বিপরীতে কম জনসংখ্যার কারণে। জার্মানির আয়তন বাংলাদেশের প্র্রায় তিনগুণ। জনসংখ্যা বাংলাদেশের প্র্রায় অর্ধেক এবং প্র্রতি বর্গকিলোমিটারে জার্মানির তুলনায় বাংলাদেশের প্র্রায় ছয়গুণ বেশি মানুষ বসবাস করে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের আয়তন বাংলাদেশের প্র্রায় দ্বিগুণ। জনসংখ্যা বাংলাদেশের প্র্রায় ৩৫ ভাগের এক ভাগ। প্র্রতি বর্গকিলোমিটারে নিউজিল্যান্ডের তুলনায় বাংলাদেশে প্র্রায় ৭৫ গুণ বেশি মানুষ বসবাস করে। সে হিসাবে বলা যায়, জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডের জনসংখ্যার ঘনত্ব প্র্রতি বর্গকিলোমিটারে বাংলাদেশের তুলনায় যেহেতু যথাক্রমে ৬ ও ৭৫ গুণ কম, সেহেতু দেশ দুটির পক্ষে করোনা মোকাবিলা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক সহজ ছিল। দেশ দুটির সরকারপ্র্রধান করোনা মোকাবিলায় বাহ্বা কুড়িয়েছে মূলত বিশাল আয়তনের তুলনায়, জনসংখ্যা নগণ্য হওয়ার কারণে এবং জনসংখ্যা ঘনত্বের বিচারে দেশ দুটি বিরল জনসংখ্যার দেশ হওয়ার কারণে। আগেই বলেছি, জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানের অধিকারী এবং আয়তন যা-ই হোক- এটি বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। সে হিসাবে, জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডের পক্ষে করোনা মোকাবিলা যতটা সহজ হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে ততটা সহজ ছিল না। যে দেশে প্র্রতি বর্গকিলোমিটারে ১ হাজার ২০০ লোক বসবাস করে, সে দেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কষ্টসাধ্য হওয়ায় করোনা সর্বগ্রাসীরূপে আবির্ভূত হওয়ারই কথা। বাংলাদেশে কিন্তু তা হয়নি। এখানে একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্য ৬৪ জন (২৯ জুন)। এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ৩ হাজার ১৭১ জন (৯ জুন)। দেখা যাচ্ছে, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশে একদিনে হাজার মৃতু্য দূরে থাক, শত মৃতু্যর ঘটনাও ঘটেনি। এর জন্য সৃষ্টিকর্তার রহমতের পাশাপাশি সঠিক নেতৃত্বও ভূমিকা রেখেছে। একদিনে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মতো উন্নত দেশে যেখানে ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ করোনা রোগী শনাক্তের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে বাংলাদেশ এ সংখ্যাকে ৩ হাজার ১৭১ জনের উপরে ওঠেনি। এখানেও সৃষ্টিকর্তার রহমতের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্ব বিশাল ভূমিকা রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে করেনাকে 'অতিমারী'রূপে আবির্ভূত হতে দেননি। এ জন্য সরকারপ্রধান হিসেবে সৃষ্টিকর্তার রহমত যে তার ওপর আছে, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। বাংলাদেশের মতো ১৭ কোটি জনসংখ্যা জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডের হলে দেশ দুটিতে কী হতো বলা মুশকিল, তবে এটা বলা যায়- জার্মানিতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে যতজন লোক বসবাস করে, রাজধানী ঢাকার একটি মহলস্নায় তার অন্তত ২০ গুণ বেশি লোক বসবাস করে। নিউজিল্যান্ডে প্রতি বর্গকিলোমিটারে যতজন লোক বসবাস করে, ঢাকার একটি হাইরাইজ ভবনে তার অন্তত ৫০ গুণ বেশি লোক বসবাস করে। সে হিসাবে, জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডের করোনা মোকাবিলা আর বাংলাদেশের করোনা মোকাবিলাকে এক পালস্নায় মাপা ঠিক নয়। এতসব সুবিধা নিয়েও মার্কেল ও জেসিন্ডা করোনা মোকাবিলায় যেভাবে গলদঘর্ম হয়েছেন, সীমিত আয়তন ও বিপুল জনসংখ্যার বাংলাদেশের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠান্ডা মাথায় তা মোকাবিলা করে চলেছেন। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, অনেক উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশকে করোনা মোকাবিলায় রোগীদের ঠাঁই দেওয়ার জন্য তাঁবু খাটাতে হয়নি এবং গণকবর খুঁড়তে হয়নি। এটা ঠিক, করোনা মোকাবিলায় এখানে লকডাউন দিতে হয়েছে, আবার অর্থনীতির চাকা সচলের জন্য যথাসময়ে লকডাউন তুলেও নেওয়া হয়েছে। লকডাউনের সময়ে ৫০ লাখ পরিবারের প্রত্যেকটিকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে নগদ সহায়তা দেওয়া সীমিত সম্পদের বাংলাদেশের পক্ষে একটি সাহসী সিদ্ধান্ত ছিল। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাখ লাখ লোককে খাদ্য সহায়তা দেওয়াও সহজ কাজ ছিল না। দেশের প্রায় চার কোটি পরিবার এই খাদ্য সহায়তার আওতায় এসেছে। ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণ এখনো অব্যাহত আছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। প্রথমে তৈরি পোশাক খাতের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন, পরে অন্যান্য খাতের জন্য আরও ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন। বলা যায়, জিডিপির আড়াই শতাংশের বেশি প্রণোদনা ঘোষণা করায় বাংলাদেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েনি এবং তৈরি পোশাকশিল্প সচল থাকায় এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় কোটি পরিবার টাকার অভাবে খাদ্যসংকটে পড়েনি। কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং এর পাশাপাশি দেশের ২৪টি জেলা ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে শঙ্কিত ছিল অনেকে। অনেকে আত্মপ্রসাদে ভুগছিল, বাংলাদেশ একটি বড় ধরনের দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এ অবস্থা সরকার কিছুতেই সামাল দিতে পারবে না। সৃষ্টিকর্তার অপার করুণায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে সে অবস্থায় উপনীত হতে হয়নি। করোনায় এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি (উন্নত বিশ্বের তুলনায় যা নগণ্য) মানুষের মৃতু্য ঘটলেও, খাদ্যের অভাবে একজন মানুষের মৃতু্য ঘটেনি। বলা যায়, বাংলাদেশ সঠিক পথেই আছে এবং সঠিক পথেই এগিয়ে আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে এত কিছু একসঙ্গে সামাল দেওয়া কীভাবে সম্ভব হচ্ছে? দেশ পরিচালনায় তার প্রতু্যৎপন্নমতি এ ক্ষেত্রে নিয়ামক হলেও অনেকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে দেশপ্রেম ধারণ করতেন, তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও ঠিক ততটুকু দেশপ্রেমই ধারণ করেন। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য জাতির পিতা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও বলেছেন, এই দেশ ও এই জাতির জন্য তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার কারণে ২০০৯ সাল থেকে টানা ১১ বছর তাকে তার জন্মদিন যুক্তরাষ্ট্রে পালন করতে হয়েছে। এবারও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন হচ্ছে। তবে করোনা মহামারির কারণে এবারের অধিবেশন হচ্ছে ভার্চুয়াল। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে দেশে থেকেই ভাষণ দিয়েছেন। এতে ১১ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রিয় দেশে জন্মদিন পালন করতে পারছেন। দেশে অবস্থান করতে না পারায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে অনেক বছর ঘটা করে তার জন্মদিন উদযাপন করেননি। এবার করোনার কারণে তিনি দেশে থাকলেও জাঁকজমকের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করবেন না। এটা প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈশিষ্ট্যও নয়। তিনি সবার আগে ভাবেন দেশ নিয়ে, দেশের মানুষকে নিয়ে। করোনার রাহুগ্রাস থেকে তিনি গোটা জাতিকে কীভাবে রক্ষা করবেন, তা-ই তার অহরাত্রির ভাবনা। প্র্রবল দেশপ্র্রেম ও বাংলা ভাষার জন্য তার ভালোবাসার কারণে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো প্র্রধানমন্ত্রিত্বের তিন মেয়াদে মোট ১৫ বার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন। জাতির পিতা তার ভাষণে গণতন্ত্র, ন্যায়পরায়ণতা, স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের প্র্রতি অবিচল আস্থা পোষণ করেছিলেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও গণতন্ত্র, বিশ্বশান্তি নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা প্র্রতিষ্ঠা, উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে বিদ্যমান অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং ক্ষুধা ও পরমাণু অস্ত্রমুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার কথা বলেছেন। এ সবের পাশাপাশি এবারের অধিবেশনে তিনি রোহিঙ্গা ও করোনাসংকট মোকাবিলায় তার ভাবনার কথাও ভাষণে তুলে ধরেছেন। করোনাসংকট মোকাবিলায় অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও জেসিন্ডা আরডার্নের মতো বিপুল সম্পদের সহায়তা তিনি পাননি। সীমিত সম্পদ ও আয়তন এবং বিপুল জনসংখ্যার মধ্যে সুসমন্বয়ের মাধ্যমে তিনি অকল্পনীয় দৃঢ়তায় করোনার আগ্রাসন মোকাবিলা করে চলেছেন। সে জন্য অনেক বিশ্লেষকই বলেন, করোনা মোকাবিলায় মার্কেল ও জেসিন্ডাকেও ছাড়িয়ে গেছেন প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সংগ্রামী ও দৃঢ়চেতা মনোবলসম্পন্ন সরকারপ্রধানকে ৭৪তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা। মো. শহীদ উলস্নাহ খন্দকার : সচিব গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে