বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাদকের ভয়াবহ বিস্তার

রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

মাদকের ভয়াবহ বিস্তার দেশের সবাইকেই উদ্বিগ্ন করছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। এ থেকে পরিত্রাণের আশায় ১৯৯০ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন (১৯৯০ সালের ২০ নং আইন) প্রণীত হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে ওই আইন ১৯৯০ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি প্রণয়ন করা হয়। এরপরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। উন্নতি হয়নি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েও।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীতে 'মাদকবিরোধী' অভিযানে ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে গ্রেপ্তার প্রত্যেকেই মাদক বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে জড়িত। তাদের হেফাজত থেকে ৩ হাজার ৩০৫ পিস ইয়াবা, ২৬১ গ্রাম হেরোইন, ২৫ কেজি ৬৬০ গ্রাম গাঁজা, ৪২ বোতল ফেনসিডিল ও ২৪০ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৫১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া ও জেলার আনোয়ারা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুই লাখ ৬৫ হাজার ১৩০ পিস ইয়াবাসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছের্ যাব-৭। এসব ইয়াবার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৩ কোটি ২৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এর দ্বারা প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় যে, দেশব্যাপী মাদকের বিস্তার কত ভয়াবহ।

বাংলাদেশে ইয়াবা আর ফেনসিডিলের বাজার তৈরি হওয়ায় মিয়ানমার এবং ভারত সীমান্তে অসংখ্য ইয়াবা আর ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠছে। এসব কারখানায় বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্য মিয়ানমার মরণনেশা ইয়াবা এবং ভারত থেকে ফেনসিডিল উৎপাদন করে তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা হচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই যে, এসব দেশে মাদক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্যই। বাংলাদেশঘেঁষা সীমান্তে মিয়ানমারে অসংখ্য ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। সেসব কারখানায় কোটি কোটি পিস ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। অবাক ব্যাপার, মিয়ানমারের মানুষ, সেখানকার যুবসমাজ খুব একটা ইয়াবা আশক্ত নয়। কোনো কোনো এলাকায় ইয়াবা কী তা সেখানকার অধিবাসী জানেনই না। মূলত বাংলাদেশীদের জন্যই সেখানে ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, এ ব্যাপারে সে দেশের সরকারের মৌন সম্মতিও আছে। মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানার কথা আমরা জানি, আমাদের সরকারও জানে, কিন্তু ইয়াবা চোরাচালান রোধ হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না এটাই এখন বড় প্রশ্ন? মাদক কারবারিরা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছে, ধরাও পড়ছে মাঝেমধ্যে। যারা মাঝেমধ্যে ধরা পড়ে তারা কেবল চুনোপুঁটি। আবার ওদের গডফাদারদের বদান্যতায় ওরা সহসাই ছাড়া পেয়ে যায়। দেশের প্রতিটি সীমান্তেই এমন হচ্ছে। ভারতের সীমান্তেও অসংখ্য ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখানেও এই একই অবস্থা। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো বাংলাদেশে মাদকের বাজার তৈরি করে নিয়েছে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে। এজন্যই দেশ মাদকে সয়লাব হচ্ছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে দেশের অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। আমরা মনে করি এই সংখ্যা অনেক। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষে নিতে না পারলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা যাবে না। সরকারের পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে যুবসমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112464 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1