মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ও বাস্তবতা

সমাজের দরিদ্রতম, সুবিধাবঞ্চিত, প্রতিবন্ধী, শারীরিকভাবে রুগ্‌ন-দুর্বল এবং পারিবারিক সাহায্যবিহীন প্রবীণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে, তাদের জন্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
মো. আরাফাত রহমান
  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

প্রবীণ ব্যক্তিরা দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার এক উলেস্নখযোগ্য অংশ। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার থেকে প্রবীণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে বেশি। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ১৯৭৫ থেকে ২০০০-এ ২৫ বছরে প্রবীণ জনসংখ্যা ৩৬ কোটি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৬০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে অর্থাৎ প্রবীণ জনসংখ্যার বছরে গড় বৃদ্ধির হার প্রায় ২.৬৮ শতাংশ। বাংলাদেশে প্রবীণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আরও অধিক। বাংলাদেশে প্রবীণ জনসংখ্যা ১৯৯১ সালে ছিল ৬০ লাখ যা ২০১১ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৩ লাখে। এ কুড়ি বছরে প্রবীণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ লাখে অর্থাৎ বছরে গড় বৃদ্ধির হার প্রায় ৪.৪১ শতাংশ। প্রবীণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির এ হার অব্যাহত থাকলে আগামী ৫০ বছরে প্রবীণ জনসংখ্যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশে দাঁড়াবে। বিশ্বময় এ জনসংখ্যাতাত্ত্বিক রূপান্তর ব্যক্তি, সমাজ, জাতীয় ও আর্থ-সামাজিক জীবনে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলবে। কারণ প্রবীণ ব্যক্তিরা বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভোগেন এবং বার্ধক্য বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত।

বার্ধক্য মানুষের জীবনে একটা স্বাভাবিক পরিণতি। বার্ধক্যের সংজ্ঞা সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। তবে শারীরিক, মানসিক, আচরণগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক বিবেচনায় জরা বিজ্ঞানীরা মূলত বয়সের মাপকাঠিতে বার্ধক্যকে চিহ্নিত করেছেন। বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোয় ৬৫ বছর বয়সি ব্যক্তিদের প্রবীণ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে ৬০ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সি ব্যক্তিদের প্রবীণ বলে অভিহিত করা হয়। বাংলাদেশে গত কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন স্বাস্থ্য কর্মসূচি গ্রহণ করার ফলে মানুষের মধ্যে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়েছে, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে, মৃতু্যহার কমে গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ায় প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্রম্নত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৯৯০ সালে মোট জনসংখ্যার ৪.৯৮ শতাংশ ছিল প্রবীণ জনগোষ্ঠী এবং ২০০১ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৬.১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জনসংখ্যার প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৫০ সালে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর এ হার হবে ২০ শতাংশ অর্থাৎ বাংলাদেশে প্রতি পাঁচ জন মানুষের মধ্যে একজন হবেন প্রবীণ। এ বৃদ্ধির হার আমাদের জাতীয় জীবনের জন্য এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশের প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রধান সমস্যাবলির মধ্যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা অন্যতম। আমাদের সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে পরিবার হলো একটি প্রাচীন প্রতিষ্ঠান। অতীতে প্রবীণরা যৌথ পরিবারে সবার কাছ থেকে সেবা এবং সহায়তা পেতেন এবং এভাবেই তাদের প্রবীণ সময় কেটে যেত। পরিবার এবং সমাজে প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনসহ তাদের বেশি যত্ন নেওয়ার একটি বিশেষ মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির চর্চা ছিল। কিন্তু বর্তমানে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক নানা পরিবর্তনের ফলে যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে। প্রবীণরা হারাচ্ছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি, বাড়ছে অবহেলা আর তারা শিকার হচ্ছেন বঞ্চনার। সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ধারায় দেখা যাচ্ছে প্রবীণরা নিজ পরিবারেই তাদের ক্ষমতা ও সম্মান হারাচ্ছেন এবং ধীরে ধীরে সমাজের সব কর্মকান্ড থেকে বাদ পড়ছেন। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের প্রবীণদের বার্ধক্যজনিত সমস্যা আর অন্যদিকে চরম আর্থিক দীনতার মধ্যে থাকার কারণে তারা পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সব ধরনের সেবা পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রবীণ এ জনগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছেন যা আগামীতে একটি জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। সমাজের বিপুল এ জনগোষ্ঠীকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করার উপায় নেই।

প্রবীণদের বার্ধক্য, স্বাস্থ্যসমস্যা, কর্ম অক্ষমতা, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব ইত্যাদি বিষয় যথাযথভাবে গুরুত্ব দিয়ে তাদের কল্যাণের জন্য ১৯৮২ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত প্রবীণবিষয়ক প্রথম বিশ্ব সম্মেলনে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনা গৃহীত হয়েছে। তা ছাড়া ২০০২ সালে ১৫৯টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে স্পেনের মাদ্রিদে প্রবীণবিষয়ক দ্বিতীয় বিশ্ব সম্মেলনে একটি সুসংবদ্ধ আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা এবং রাজনৈতিক ঘোষণা গৃহীত হয় যা 'মাদ্রিদ আন্তর্জাতিক কর্ম-পরিকল্পনা' হিসেবে পরিচিত। এ নতুন পরিকল্পনা সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সুশীল সমাজ কর্তৃক বাস্তবায়নের জন্য তিনটি প্রধান অগ্রাধিকারমূলক নির্দেশক ও একগুচ্ছ কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে প্রবীণবিষয়ক যে সব সমস্যা ও সম্ভাবনা দেখা দেবে সেগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য এ কর্মসূচিগুলো নতুন ভিত্তি তৈরি করবে।

নাগরিক হিসেবে প্রবীণ ব্যক্তিরা পূর্ণ অধিকার, সার্বিক নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে যাতে ভূমিকা পালন করতে পারে সে জন্য মাদ্রিদ বিশ্ব সম্মেলনের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট ঘোষণা উপস্থাপন করে। প্রবীণ ব্যক্তিদের সার্বিক কল্যাণ ও আর্থ-সামাজিক সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৮ সাল থেকে বয়স্ক-ভাতা প্রদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। সরকার অবসরপ্রাপ্তদের পেনশনব্যবস্থা সহজীকরণ ও সুবিধাদি বৃদ্ধি করেছে। তবে প্রবীণদের বৃহত্তর স্বার্থে অর্থাৎ প্রবীণদের অধিকার, উন্নয়ন এবং সার্বিক কল্যাণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম গ্রহণ প্রয়োজন। পরে ২০০২ সালে 'মাদ্রিদ আন্তর্জাতিক কর্ম-পরিকল্পনা' গৃহীত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ওই পরিকল্পনার প্রতি রাষ্ট্রীয় সমর্থন ব্যক্ত করেছে। প্রবীণদের অধিকার, উন্নয়ন এবং সার্বিক কল্যাণে দীর্ঘমেয়াদি এবং স্থায়ী কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি নীতিমালা আবশ্যক হওয়ায় ২০১৪ সালে জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

এ নীতিমালার লক্ষ্য প্রবীণদের মর্যাদাপূর্ণ, দারিদ্র্যমুক্ত, কর্মময়, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ সামাজিক জীবন নিশ্চিত করা। এ নীতিমালার উদ্দেশ্য সংশ্লিষ্ট জাতীয় নীতিমালাগুলোয় প্রবীণ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা এবং যথাযথ কর্মপরিকল্পনা সুনির্দিষ্ট করে তা বাস্তবায়ন করা; বাংলাদেশের প্রবীণ ব্যক্তিদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবদানের স্বীকৃতিসহ সামগ্রিক উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ; স্থানীয় সরকার, উন্নয়ন ও সামাজিক উদ্যোগে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবীণদের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরির নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন; জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে প্রবীণদের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা এবং বিদ্যমান সরকারি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোতে প্রবীণদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেবা প্রদানের নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রবীণদের স্বাস্থ্য সহায়তার ক্ষেত্রে সামাজিক ও ব্যক্তিগত উদ্যোগকে উৎসাহিত করা;

ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ ও প্রচলিত যৌথ পরিবারব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে প্রবীণদের সার্বিক সুরক্ষার আইন প্রণয়নের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা; রাষ্ট্রীয় তথ্যের ক্ষেত্রে প্রবীণবিষয়ক তথ্য সুনির্দিষ্ট করা এবং সেই সঙ্গে তা হালনাগাদ করা, এর জন্য জরিপ ও গবেষণা কাজ পরিচালনা; সব শ্রেণির প্রবীণ উপযোগী আবাসন নিশ্চিত করা এবং যাবতীয় ভৌত কাঠামো প্রবীণবান্ধবকরণ; সার্বিক দুর্যোগব্যবস্থাপনা তথা দুর্যোগপূর্ব সতর্কীকরণ, দুর্যোগকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আশ্রয়, ত্রাণ এবং পরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচিতে প্রবীণদের অগ্রাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিতকরণ; প্রবীণ ইসু্য সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গণমাধ্যমকে সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতার আওতায় আনা এবং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পাঠক্রমে প্রবীণ বিষয়টি অন্তর্ভুক্তকরণ; প্রবীণ নারী এবং প্রতিবন্ধী প্রবীণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে উদ্ধৃত সব বৈষম্য ও অবহেলা দূর করে বিশেষ সহায়তা প্রদান; এবং আন্তঃপ্রজন্ম যোগাযোগ ও সংহতি গঠন এবং সংরক্ষণের নীতি গ্রহণ।

আজকের সমাজ ও সভ্যতার কারিগর মূলত প্রবীণরাই। তাই তাদের সামাজিক অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তা হলো: পরিবার, জনসমষ্টি ও অর্থনীতিতে প্রবীণদের অবদান স্বীকার করা এবং সেগুলোকে উৎসাহিত করা; প্রবীণ ব্যক্তিরা যাতে দেশের চলমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও জীবনশিক্ষায় তাদের অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখতে পারেন সে জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা; প্রবীণ ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক চাহিদার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং সে অনুযায়ী সমাজে বসবাসের নিশ্চয়তা বিধান; প্রবীণ জনগোষ্ঠীর উৎপানশীল ক্ষমতার নিরিখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সরকারি ও বেসরকারি কাজে ব্যবহার; জাতীয়, সামাজিক ও স্থানীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয়তা ও সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করা। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রবীণ নারীরাও যাতে পূর্ণ ও সমান অংশগ্রহণ করতে পারেন সে জন্য উদ্যোগ গ্রহণ।

প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রাপ্য সম্মান প্রদানের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে করণীয়ের মধ্যে রয়েছে : প্রবীণ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে 'জ্যেষ্ঠ নাগরিক' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান; প্রবীণ ব্যক্তিদের সমাজের বৈষম্য ও নিপীড়নমুক্ত নিরাপদ জীবনযাপনের নিশ্চয়তা বিধান; জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সম্পদ, মর্যাদা, লিঙ্গ, বয়স নির্বিশেষে রাষ্ট্রে প্রবীণ ব্যক্তিদের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা; সমাজে প্রবীণ ব্যক্তিদের শিক্ষা, সাংস্কৃতি, ধর্মীয়, নৈতিক ও চিত্তবিনোদনমূলক কর্মকান্ডে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা; প্রবীণ ব্যক্তিদের মানবাধিকার ও পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার সুরক্ষা; সব ধরনের টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড, হাসপাতাল ও সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ভবনগুলোয় ঢালুপথের ব্যবস্থা করা। শহরের প্রতিটি ফুটপাত, উঁচু রাস্তার শেষপ্রান্ত চলাচলের সুবিধার্থে ঢালু করা; প্রবীণ নাগরিকদের জন্য 'পরিচিতি কার্ড' প্রবর্তন; সব ধরনের যানবাহনে প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য আসন সংরক্ষণ এবং বিশেষ ছাড়ে অর্থাৎ স্বল্প মূল্যে টিকিট প্রদানের ব্যবস্থা করা। প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য দিবা-যত্ন কেন্দ্র এবং প্রবীণ নিবাস স্থাপন; দুস্থ প্রবীণ ব্যক্তিদের মৃতু্যর পর দাফন-কাফন এবং সৎকারের ব্যবস্থা করা।

সমাজের দরিদ্রতম, সুবিধাবঞ্চিত, প্রতিবন্ধী, শারীরিকভাবে রুগ্ন-দুর্বল এবং পারিবারিক সাহায্যবিহীন প্রবীণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে, তাদের জন্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

\হঅবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সেবার প্রতি গুরুত্ব আরোপকরণ; প্রবীণ ব্যক্তিদের কল্যাণে নিয়োজিত উপযুক্ত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে উৎসাহিত ও জোরদারকরণ। পরিবারের প্রবীণ ব্যক্তিদের সেবা প্রদানের জন্য সরকারি ত্রাণ এবং অন্যান্য সাহায্যের ব্যবস্থা করা এবং সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য কল্যাণমূলক কার্যক্রম চালু করা; সরকারি ও বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ 'কল্যাণ তহবিল' গঠন করা; প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্রের মতো 'প্রবীণ কল্যাণ সঞ্চয়পত্র' প্রবর্তন করা; স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুদানে তহবিল গঠন এবং প্রবীণ ব্যক্তিদের কল্যাণে ব্যয় করা; সমাজের শিল্পপতি, ধনীব্যক্তি, দানশীল ব্যক্তির ট্রাস্ট/প্রতিষ্ঠান ও অন্যদের কাছ থেকে দান ও অনুদান সংগ্রহ করে তহবিল গঠন; এবং সরকারি বাজেটে প্রবীণদের কল্যাণে গৃহীত কর্মসূচি ও প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ এবং প্রবীণদের কল্যাণে গঠিত প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান করা।

মো. আরাফাত রহমান : কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112462 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1