বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রেমিট্যান্সে রেকর্ড কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

নতুনধারা
  ০৫ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

করোনা মহামারিকালে বিপর্যস্ত বিশ্ব। দেশেও বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে কোরবানির ঈদ ঘিরে রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতি আশা করা হয়েছিল- কিন্তু শুধু আশা পূরণই নয়, বরং প্রত্যাশা ছাপিয়ে তা নতুন রেকর্ডও গড়েছে- যা অত্যন্ত ইতিবাচক। প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে, নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মোট ২৬০ কোটি (২.৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে এত বেশি রেমিট্যান্স আগে কখনই আসেনি। জানা যায়, গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। আর গত জুন মাসের চেয়ে বেশি এসেছে ৪২ শতাংশ। এর আগে এক মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল গত জুন মাসে ১৮৩ কোটি ২৬ লাখ ডলার। আর গত বছরের জুলাই এসেছিল ১৫৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এমনটিও আলোচনায় এসেছে যে, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে জুলাই মাসে বেশি রেমিট্যান্স আসবে, সেটা আগেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল। তবে এত আসবে, কেউ কল্পনা করেনি।

আমরা বলতে চাই, এই মহামারিকালে রেমিট্যান্স প্রাপ্তির এই খবর সন্দেহাতীতভাবেই ইতিবাচক। যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, দেশের অর্থনীতিসহ সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ফলে এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা ১ কোটিরও বেশি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ বা রেমিট্যান্স। দেশের জিডিপিতে এই রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। এটা ঠিক যে, করোনাভাইরাস মহামারিতে মার্চ থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ওলটপালট হয়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্সও কমে গিয়েছিল। কিন্তু এপ্রিল থেকে রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতির ধারা চলছে। ফলে এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার, রেমিট্যান্সে রেকর্ড গড়লেও এই ধারা কতদিন অব্যাহত থাকবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েই গেছে। কেননা, এই মহামারিকালে পরিবার-পরিজনের প্রয়োজনে সর্বশেষ জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; এমনটিও আলোচনায় আসছে এবং অনেকে আবার দেশে ফিরে আসার চিন্তাভাবনা করছেন; তাই যা কিছু আছে সব আগেই দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ সব কারণেই রেমিট্যান্স বেড়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। ফলে এরপর কী হবে, সে উদ্বেগও আলোচনায় আসছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাস মহামারি গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকে স্থবির করে দিয়েছে। বাংলাদেশের জনশক্তি যে সব দেশে বেশি রয়েছে, তেলের দাম কমে যাওয়ায় সেই মধ্যপ্রাচ্যেও দেখা দিচ্ছে সংকট। আর মহামারির কারণে অনেক কর্মীকে বিদেশ থেকে দেশে ফিরতে হয়েছে। তাদের পুনরায় ফিরে যাওয়াও পড়েছে অনিশ্চয়তায়। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হবে এবং যে কোনো সংকট সৃষ্টি হলে তা নিসরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একদিকে রেমিট্যান্সে রেকর্ড এটা যেমন ইতিবাচক, তেমনি যে শঙ্কার বিষয় আলোচনায় আসছে তাও এড়ানোর সুযোগ নেই। কেননা, এমনটিও জানা যাচ্ছে যে, বিদেশে অনেকেরই এখন কাজ নেই। অনেকেই দেশে চলে এসেছেন। নতুন করে কেউ কোনো দেশে যাচ্ছেন না। ফলে যারা বিভিন্ন দেশে আছেন তাদের একটি অংশ যদি দেশে চলে আসে, তাহলে ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স আসবে কোত্থেকে? এমন প্রশ্নও উঠে আসছে। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই।

সর্বোপরি বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বই এক ভয়াবহ বাস্তবতার মুখোমুখি। ফলে সব দিক বিবেচনায় নিয়েই প্রবাসী আয়ের বিষয়টি আমলে নিতে হবে একইসঙ্গে রেমিট্যান্স পাঠানোর ধারা যেন অব্যাহত থাকে সেই লক্ষ্যেও কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে তা আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে নিতে হবে সঠিক পদক্ষেপ। করোনাভাইরাসের এই মহাসংকটের সময় রেমিট্যান্সের প্রত্যাশা ছাপিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। একইসঙ্গে শঙ্কার বিষয়ও আমলে নিয়ে সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত হবে- এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<107650 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1