বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হতে

শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তির লড়াইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবেন মাত্র কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। ভর্তি পরীক্ষা এখন যেন এক 'যুদ্ধ'। ঢাল-তলোয়ারের ঝনঝনানি নেই ঠিক। কিন্তু সারাদেশের লাখো শিক্ষার্থীকে যে কঠিন প্রতিযোগিতা, তাতে যুদ্ধ শব্দটা বোধ হয় বাড়াবাড়ি নয়। ভর্তি পরীক্ষায় জয়ী হতে কী কী করতে হবে তা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন- আশিক ইসলাম।
  ০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হতে

পরিশ্রমীরা ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হন

এম কামিল আহমেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি শেষ করেই প্রায় প্রত্যেক জ্ঞানপিপাসুর স্বপ্ন থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। মুক্তচিন্তার পবিত্রভূমি খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধের বৈতরণী পর হতে হয়। যা রীতিমতো যুদ্ধজয়ের মতো। কঠিন প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষায় নিজের আসন পাকাপোক্ত করতে দরকার কঠোর অধ্যবসায়। তবে অন্ধভাবে শুধু গাদাগাদা তথ্য মুখস্ত করলেই চলবে না হতে হবে কৌশলী। মূল বইয়ের খুঁটিনাটি তথ্যাদি ধৈর্যের সহিত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে। ব্যতিক্রমধর্মী নিয়মগুলো বারবার সমাধান করতে হবে বুঝে শুনে। কোনোরকম নেতিবাচকতায় কান না দিয়ে টেবিলের সাথে সখ্য গড়ে তুলতে হবে। শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙা থাকার পাশাপাশি নিয়মিত ধর্মীয় কর্মও সম্পাদনা করতে হবে।

রুটিনমাফিক পড়তে হবে

জামিল আহমদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর কী স্বপ্ন দেখছেন, কী লক্ষ্য নির্ধারণ করছেন ও কোথায় ভর্তি হচ্ছেন, সেটার ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য এই সময়টাতে যতটা একাগ্রচিত্তে ও আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে, ততই ভালো ফল পাওয়ার নিশ্চয়তা বেড়ে যায়। মনে রাখতে হবে, প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট রুটিনমাফিক পড়ার অভ্যাস করতে হবে। না বুঝে মুখস্ত করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে বুঝে পড়তে হবে এবং সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধানের পাশাপাশি সেখান থেকে ধারণা নিয়ে প্রতিদিন মডেল টেস্ট অনুশীলন করলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করে হতাশা না বাড়ানোই ভালো।

চান্স পাব এই মানসিকতা নিয়ে পড়তে হবে

তামজিদ উদ্দিন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

উচ্চ মাধ্যমিকের পর প্রায় সব শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা ভর্তিযুদ্ধ নামক লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবুও সবার মাঝে কাজ করতেছে আমি কি টিকব? আমি কি চান্স পাব? এই নিয়ে হতাশায় থাকে সব শিক্ষার্থীর। আমি মনে করি শিক্ষার্থীরা চান্স না পাওয়ার প্রথম ও প্রধান কারণ হতাশা। হতাশা শিক্ষার্থীদের অনেক পিছনে ফেলে দেয়। যার ফলে চান্স পাওয়াতো দূরের কথা পজিশনও আসে না। যেসব শিক্ষার্থী হতাশাকে দূরে ফেলে দিয়ে সফল হওয়ার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যায় তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পান। অনেকেই কম জিপিএ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পান। আবার একইভাবে ভালো ফলাফল থাকা সত্ত্বেও চান্স পান না। তাই হতাশ না হয়ে, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাব এই মানসিকতা নিয়ে পড়তে হবে।

বোর্ড বইয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে

ফাতেমা-তুজ-জোহরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

ভর্তি পরীক্ষা মানে স্বপ্নের জায়গায় বিচরণ করার জন্য একটা সিঁড়ি মাত্র। তাই কম-বেশি সবাই চিন্তিত থাকে। 'কী পড়ব, কীভাবে পড়ব, কোনটা গুরত্ব দিব, কোনটা দিব না' এসব নিয়ে। বোর্ড বইয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি সমসাময়িক বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। বোর্ড বইগুলো নিখুঁতভাবে শেষ করতে হবে। বইয়ের সূত্রগুলো লিখে বারবার অনুশীলন করতে হবে। সব শেষে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ব্যাংক সলভ করতে হবে। অবশ্যই কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। তবেই হবে স্বপ্ন পূরণ।

হতাশা নয়, আত্মবিশ্বাসেই হবে ভর্তিযুদ্ধ জয়

মইনউদ্দিন খান সিফাত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

কলেজ জীবনের শেষে মুক্ত জ্ঞান সৃষ্টি, জ্ঞান চর্চা ও জ্ঞান বিকাশের এক বিশাল মঞ্চের নাম বিশ্ববিদ্যালয়। আশা ভরসা, চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস দিয়েই এ মঞ্চে নিজের আসনটিকে পাকাপোক্ত করে নিতে হয়। আর এজন্য প্রয়োজন নিজের ওপর আস্থা-বিশ্বাস। এই বিশ্বাসের ওপর পুঁজি করেই অর্জিত হয় সাহস। সাহসের মাধ্যমেই ভর্তিযুদ্ধের ভয়কে জয় করতে হয়। আর ভর্তিযুদ্ধে জয়ের জন্য প্রয়োজন তিনটি বিষয়। এগুলো হলো- পরিশ্রম, পরিশ্রম আর পরিশ্রম। এক কথায় বলতে গেলে পরিশ্রমই সেই আসন এনে দিতে সহায়ক। পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসকে ধরে রাখতে প্রয়োজন সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজের ইচ্ছা ও স্বপ্নপূরণের কথা ব্যক্ত করা। সময়কে সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে হবে। কারণ এটা মাথায় রাখতে হবে করোনাকালীন সময়ে পৃথিবী থেমে থাকলেও থেমে নেই সময়। তোমাকে ঠিকই ভর্তিযুদ্ধে নামতে হবে। সুতরাং বুদ্ধিমানের কাজ হলো নিজের প্রস্তুতির সর্বোচ্চটা নিয়েই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া। মনে রাখবে, প্রশিক্ষণের মাঠে যত বেশি ঘাম ঝরাবে, যুদ্ধের মাঠে ততই শক্তিশালী যুদ্ধ হতে পারবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে